জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ
প্রথম দিন খেলা হয় ৭৯ ওভার। পরের দুই দিন খেলা হলো আরও কম। দ্বিতীয় দিন ৬৯ ওভার ও তৃতীয় দিন ৬৮ ওভার। সব মিলিয়ে তিন দিনে ৫৪ ওভার কম খেলা হয়েছে। মিরপুর টেস্ট শেষ হতে এখনও দুই দিন বাকি। কিন্তু কোনো হিসাবেই বাংলাদেশের জয়ের পথে বাধার তৈরি হচ্ছে না। চতুর্থ দিনেই বড় জয় তুলে নেওয়ার ছবি আঁকছে ঘরের মাঠের দলটি।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ রানেই ২ উইকেট হারায় আফগানরা। শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে ৪৫ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। রহমত শাহ ১০ ও নাসির জামাল ৫ রানে অপরাজিত আছেন। জয়ের জন্য ৬১৭ রান দরকার আফগানিস্তানের, বাংলাদেশের দরকার ৮ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। আফগানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬৬২ রান। যা কোনো প্রতিপক্ষকে দেওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লক্ষ্য। এর আগে জিম্বাবুয়েকে দেওয়া ৪৭৭ রানের লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ।
বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারেই তোপ দাগেন তাসকিন আহমেদ, তার শিকার আব্দুল মালিক। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করা আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি বলের আঘাতে মাঠ ছাড়েন। তাসকিনের কোমর বরার বল নিচু হয়ে ছাড়তে গিয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি।
এর আগে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকির ও শান্তর ব্যাটে তৃতীয় দিনেও ভালো শুরু করে বাংলাদেশ। সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোচ্ছিলেন তারা। যদিও জাকির পারেননি, ৯৫ বলে ৮টি চারে ৭১ রান করে বিদায় নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। টেস্টে এটা তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। জাকির ও শান্ত ১৭৩ রানের জুটি গড়েন।
জাকিরের বিদায়ের পর শান্তর সঙ্গে জুটি বাধেন মুমিনুল। এই জুটি দারুণ ব্যাটিংয়ে লিড বাড়িয়ে নিতে থাকেন। তৃতীয় উইকেটে ৮৩ রানের জুটি গড়েন শান্ত-মুমিনুল। এর মাঝে সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রথম ইনিংসেও সেঞ্চুরি করা শান্ত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়লেন তিনি। এতোদিন রেকর্ডটি মুমিনুলের দখলে ছিল।
২০১৮ সালে চট্টগ্রামের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৫ রান করেন মুমিনুল। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রান করা শান্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১ বলে ১৫টি চারে ১২৪ রান করে আউট হন, এটা তার চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। এরপর মুশফিকুর রহিম দ্রুতই আউট হলে মুমিনুলের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস।
এই জুটির সামনে বাধার দেয়াল তুলতে পারেনি আফগানরা। ১৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মুমিনুল-লিটন। এই জুটিতে রানের পাহাড় আরও বড় করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুমিনুল।
প্রায় ২৬ মাস পর টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ১৪৫ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ১২১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। টেস্টের সাবেক এই অধিনায়কের এটা দ্বাদশ সেঞ্চুরি, যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। লিটন ৮১ বলে ৮টি চারে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের জহির খান ২টি এবং আমির হামজা একটি উইকেট নেন।