সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ১১৯
তাসকিন আহমেদের আগুনে বোলিংয়ে শুরুতেই দিকহারা আফগানিস্তান, দুই উইকেট হারিয়ে প্রথম আট ওভারে রীতিমতো ধুঁকতে হয় সফরকারীদের। এর মাঝেই ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নবী কিছুটা গতি এনে দিয়ে বিদায় নেন। এরপর আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের কার্যকরী ইনিংসের সঙ্গে করিম জানাতের ঝড়ো ইনিংস, তাতে লড়াকু সংগ্রহই পেলো আফগানিস্তান।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করা আফগানিস্তান ৭ উইকেটে ১১৬ রান তুলেছে। বৃষ্টির কারণে তিন ওভার কমানো হয়েছে। বৃষ্টি আইনে ১৭ ওভারে জয়ের জন্য ১১৯ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। এই ম্যাচ জিতলে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে তারা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা আফগানিস্তানের ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ তেড়েফুঁরে শুরু করেন। তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন তিনি। পরের বলেও বাউন্ডারি মারতে যান গুরবাজ, এবার আর টাইমিং হয়নি। তাসকিনের বাউন্সার টেনে খেলতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলেন তিনি, যা তাসকিন নিজেই তালুবন্দী করেন।
এই উইকেটে সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমানের পর তৃতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আফগানদের দ্বিতীয় উইকেট নিতেও দেরি করেননি আগুনে বোলিং করতে থাকা তাসকিন। নিজের দ্বিতীয় ওভারে গতিময় এক্সট্রা বাউন্সে হজরতউল্লাহ জাজাইকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি।
এরপর আফগানদের প্রতিরোধ, দলকে পথ দেখাতে থাকেন ইব্রাহিম জাদরান ও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। ৭.২ ওভারে ২ উইকেটে ৩৯ রান তোলার পর সিলেটে শুরু হয় বৃষ্টি। দেড় ঘণ্টা বিরতির পর খেলা শুরু হয়, তবে তিন ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়। শুরুটা ভালো হয়নি, রানও ওঠেনি। তাই মারকুটে মেজাজে শুরু করার চেষ্টা করেন ইব্রাহিম ও নবী।
যদিও সেভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না তারা। অষ্টম ওভারে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান ইব্রাহিম। নাসুমের করা ইনিংসের নবম ওভারে দুটি ক্যাচ তুলে বেঁচে যান নবীও। সাকিব মিস করার পরের বলেই ক্যাচ ছাড়েন উইকেটরক্ষক লিটন। জীবন ফিরে পাওয়ার সুবিধা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি নবী, দশম ওভারে মুস্তাফিজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২২ বলে একটি চারে ১৬ রান করেন তিনি।
পরের বল থেকেই অবশ্য ঝড় ওঠে। উইকেটে গিয়েই মুস্তাফিজকে চার মারেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। এক রান নিয়ে ইব্রাহিমকে স্ট্রাইক দিলে তিনি মারেন ছক্কা। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা এই জুটি ভাঙেন সাকিব, ১১তম ওভারের প্রথম বলে তার শিকার ইব্রাহিম। ২৭ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রান করেন আফগান এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
এই ওভারের শেষ বলে ৫ রান করা নাজিবুল্লাহর স্টাম্প উপড়ে নেন সাকিব। পরের ওভারে নাসুমের খরচা পাঁচ রান। কিন্তু ১৩তম ওভারটি খরুচে করেন হাসান মাহমুদ। তার ওভার এই থেকে ১৬ রান পায় আফগানরা, আগের ম্যাচে ঝড় তোলা আজমতউল্লাহ ওমরজাই একটি করে ছয় ও চার মারেন। তাসকিনের করা ১৪তম ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন আগের ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান করিম জানাত, এই ওভার থেকে যায় ১২ রান।
পরের ওভারে দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ৩ রান খরচা করেন মুস্তাফিজ, নেন ২১ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২৫ রান করা আজমতউল্লাহর উইকেটও। শেষ ওভারের প্রথম চার বলে মাত্র এক রান খরচা করেন তাসকিন। ফেরান ১৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান করা করিম জানাতকে। কিন্তু পঞ্চম বলে বিশাল ছক্কা মারেন অধিনায়ক রশিদ খান। তাসকিন ৪ ওভারে ৩৩ রানে ৩টি উইকেট নেন। মুস্তাফিজ ৩ ওভারে ৩০ রানে ২টি ও সাকিব ৩ ওভারে ১৫ রানে ২টি উইকেট নেন।