দুঃস্বপ্নের ইনিংসে অধিনায়ক শান্তর একার লড়াই
এশিয়া কাপ থেকে শুরু, সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে আরও একবার বন্দী থাকলো বাংলাদেশ। ব্যাটিং করতে নেমে নাভিশ্বাস অবস্থায় পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আবারও হাঁটলো উল্টো পথে, টানা দুই ম্যাচে ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে ব্যর্থ হলো তারা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে দলকে পথ দেখাতে পারলেন কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিতে নামা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ইনিংসে সংগ্রহ বড় হলো না বাংলাদেশের।
প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত, দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। কিন্তু এই ম্যাচে ব্যাট হাতে লড়াই-ই করতে পারলো না তারা। মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৪.৩ ওভারেই ১৭৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। শান্ত খেলেছেন ৭৬ রানের ইনিংস, দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা মিলে করেছেন ৯৫ রান।
শুরুতেই দিক হারায় বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জাকির হাসান। ওয়ানডেতে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলকে নামা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫ বলে ১ রান করে আউট হন। চার মেরে ইনিংস মুরু করা তানজিদ হাসান তামিমও টিকতে পারেননি, ট্রেন্ট বোল্টের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫ বলে ৫ রান করেন তিনি।
৮ রানেই নেই ২ উইকেট, দিকহারা দলকে ঠিক পথে ফেরানোর চেষ্টা করেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। এই জুটিতে ৩৫ রান পর্যন্ত পৌঁছায় বাংলাদেশ। দারুণ শুরু করা তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। অ্যাডাম মিলনের বলে ক্যাচ তুলে আউট হওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৭ বলে ৩টি চারে ১৮ রান করেন।
শান্তর সঙ্গে যোগ দিয়ে মুশফিকুর রহিম সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেন। এই জুটিতে চাপ কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসতভাবে আউট হন ২৫ বলে ২টি চারে ১৮ রান করা মুশফিক। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক লকি ফার্গুসনের একটি ডেলিভারি ডিভেন্স করেও বাঁচতে পারেননি তিনি, বল গিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। পা দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেও বল ফেরাতে পারেননি মুশফিক।
অন্য প্রান্তে ভাঙনের সুর বেজে যেতে থাকলেও নেতার মতো করেই ব্যাট চালিয়ে যেতে থাকেন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে নামা শান্ত। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৪৯, শেখ মেহেদি হাসানের সঙ্গে ১৯ রান ও নাসুম আহমেদের সঙ্গে ১২ রানের জুটি গড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লাহ ২৭ বলে ২টি চারে ২১, শেখ মেহিদ ১৪ বলে ২টি চারে ১৩ ও নাসুম ১৯ বলে ৭ রান করেন।
সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া শান্ত ৮৪ বলে ১০টি চারে ইনিংস সেরা ৭৬ রান করেন। এই ইনিংসটি দিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলে নিয়েছেন তিনি। প্রথম ম্যাচের হিসেবে বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এখন তার। এতোদিন অধিনায়কত্বের অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলের। ১৯৯৮ সালে ভারতের বিপক্ষে ৭০ রান করেন তিনি। নেতৃত্বের অভিষেকের ম্যাচে হাবিবুল বাশার ৬১ ও সাকিব আল হাসান ৫৪ রান করেন। নেতৃত্বের অভিষেকে বাংলাদেশের আর কেউ হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি।
বাংলাদেশকে অল্প রানে আটকে ফেলার পথে বল হাতে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেন অ্যাডাম মিলনে। ডানহাতি এই পেসার ৬.৩ ওভারে ৩৪ রানে ৪টি উইকেট নেন। ৬ ওভারে ৩৩ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। কোল ম্যাকনকির শিকারও ২ উইকেট, ৫ ওভারে ১৮ রান খরচা করেন তিনি। এ ছাড়া লকি ফার্গুসন ও রাচিন রবীন্দ্র একটি করে উইকেট পান।