লিড নেওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দিলেন মুমিনুল
বোলার হলেও ব্যাটিংটা জানা আছে কাইল জেমিসন ও টিম সাউদির। দ্বিতীয় দিন অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া এ দুজন সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে নির্ভার থেকেই খেলে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশের কোনো বোলারই পারছিলেন না জুটিটি ভাঙতে। নিয়মিত বোলাররা যখন ব্যর্থ, তখন কাজটি করলেন অনিয়মিত বোলার মুমিনুল হক। লিড নেওয়ার পরপরই জেমিসন ও সাউদিকে ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দিলেন বাংলাদেশের সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলমান টেস্টে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থেমেছে ৩১৭ রানে, ৭ রানের লিড পেয়েছে সফরকারীরা। ৮ উইকেটে ২৬৬ রান করে দ্বিতীয় দিন শেষ করা কিউইরা আজ ৫১ রান যোগ করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে দুই পেসার জেমিসন ও সাউদির ব্যাটে। নবম উইকেটে এ দুজন ৫২ রানের জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙার পর শেষ উইকেটটিও তুলে নেওয়া মুমিনুল ৪ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন। টস জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করে।
নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেওয়ার পথে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা কিউই অধিনায়ক সাউদি ৬২ বলে ৩টি চারে ৩৫ রান করেন। এই ইনিংস খেলার পথে নিউজিল্যান্ডের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ উইকেট ও ২ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁন তিনি। জেমিসন ৭০ বলে একটি চারে ২৩ রান করেন। বোলিংয়ে আগেরদিন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া তাইজুল ইসলাম ১০৯ রান খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন। ৪ রানে মুমিনুলের শিকার ৩ উইকেট, যা টেস্টে তার সেরা বোলিং। শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান একটি করে উইকেট পান।
আগের দিন নিউজিল্যান্ডকে ভালো শুরু করতে দেয়নি বাংলাদেশ। দলীয় ৩৬ রানে টম ল্যাথামকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন তাইজুল। সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন ৪৪ বলে ৩টি চারে ২১ রান করা ল্যাথাম। ৮ রান পরই মেহেদী হাসান মিরাজের তোপ, তার শিকার ডেভন কনওয়ে। ৪০ বলে একটি চারে ১২ রান করে আউট হন কিউই এই ব্যাটসম্যান। ৪৪ রানে দুই উইকেট চাপে পড়া দলকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেন ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস।
তৃতীয় উইকেটে এ দুজন ৫৪ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৯৮ রানে থামতে হয় নিকোলসকে। ৪২ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৯ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান শরিফুল। বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসারের ১৩৩ কি.মি গতির অফ স্টাম্পের বাইরে করা ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন নিকোলস। এরপর আবারও নিউজিল্যান্ডের লড়াই, ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন এক পাশ আগলে খেলে যাওয়া উইলিয়ামসন।
এই জুটিতে তারা ৬৬ রান যোগ করেন। ৫৪ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ রান করা মিচেলকে ফিরিয়ে জুটিটি ভাঙেন নিউজিল্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি ভোগানো তাইজুল। পরের জুটিটি বড় হয়নি কিউইদের, টম ব্লান্ডেল দ্রুতই ফিরে যান। ২৩ বলে ৬ রান করা উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘর দেখিয়ে দেন ডানহাতি স্পিনার নাঈম হাসান। ৫ উইকেট হারানোর পর ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি পায় নিউজিল্যান্ড। ষষ্ঠ উইকেটে ৭৮ রান যোগ গড়েন উইলিয়ামসন ও গ্লেন ফিলিপস।
ফিলিপস ৬২ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৪২ রান করেন। এর কিছুক্ষণ পরই আউট হন উইলিয়ামসন। তাইজুলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২০৫ বলে ১১টি চারে ১০৪ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এরপর ইশ সোধিকে দ্রতই ফেরান তাইজুল। দিনের বাকিটা অংশ ব্যাটিং করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন দলটির দুই পেসার জেমিসন ও সাউদি।