শান্তর রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দিন, বড় লিডের আশা
২৬ রানেই নেই দুই উইকেট, ভালো শুরুর পরও রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন মুমিনুল হক। তিন উইকেটের দুটিই রান আউট, বাংলাদেশ শিবিরে হতাশার শেষ ছিল না। কিন্তু সব ছাপিয়ে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে দিনটা বাংলাদেশের নামে লিখিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দারুণ সঙ্গ দিলেন মুশফিকুর রহিমও। এ দুজনের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে ২০০ ছাড়ানো লিড দিয়ে হাসিমুখে তৃতীয় দিন শেষ করলো স্বাগতিকরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ ওভারে ৩ উইকেটে ২১২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে ২০৫ রানের লিড পেয়েছে তারা। শান্ত ১৯৩ বলে ১০টি চারে ১০৪ ও টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক মুশফিক ৭১ বলে ৫টি চারে ৪৩ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৩১০ রানের জবাবে সব কটি উইকেট হারিয়ে ৩১৭ রান করা কিউরা ৭ রানের লিড পেয়েছিল।
তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের হাতে যে নাটাই, সেটা সম্ভব হয়েছে অধিনায়ক শান্তর অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কারণে। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নিজে ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক, বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়েছেন শক্ত অবস্থানে। টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে বেশ কয়েকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকে সেঞ্চুরি করলেন তিনি।
এর আগে টেস্ট নেতৃত্বের অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল সাকিব আল হাসানের, ওয়েস্ট ইন্ডজের বিপক্ষে অপরাজিত ৯৬। দ্রুততম পাঁচটি টেস্ট সেঞ্চুরি করার রেকর্ডও এখন শান্তর দখলে, ২৪ টেস্টে পাঁচবার সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন তিনি। ২৬ টেস্টে পাঁচ সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। চার ইনিংসে তিন সেঞ্চুরি করা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানও শান্ত। নিজের সর্বশেষ ম্যাচে চলতি বছরের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের। দলীয় ২৩ রানেই নিউজিল্যান্ড স্পিনার এজাজ প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান বাঁহাতি ওপেনার জাকির হাসান। প্রথ উইকেট হারানোর চাপ কাটিয়ে ওঠার আগে নিজেদের ভুলেই বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। রান আউটে কাটা পড়ে বিদায় নেন ৪৬ বলে ৮ রান করা আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ২৬ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে দিক হারিয়ে বসার দশা তখন বাংলাদেশের, এখান থেকে হাল ধরেন শান্ত ও মুমিনুল।
চাপ কাটিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১৬১ বলে ৯০ রানের জুটি গড়ে তোলেন এ দুজন। কিন্তু এই জুটির শেষটা হয় দুর্ভাগ্যজনকভাবে। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে থামতে হয় মুমিনুলকে। ৬৮ বলে ৪টি চারে ৪০ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল। এরপর শান্তর সঙ্গে দেন মুশফিক, গড়ে ওঠে আরেকটি জুটি। এ দুজনের ব্যাটে দিনের বাকিটা সময় ভালোভাবেই পার করে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে তারা ১৬২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯৬ রানের জুটি গড়েছেন। নিউজিল্যান্ডের এজাজ একটি উইকেট নিয়েছেন।