হাসানের ৫ উইকেট, বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৮৫
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের শাসনই জারি আছে। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের অল্প রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও লিটন কুমার দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের ইতিহাসগড়া জুটিতে প্রায় সমানে সমান লড়াই করে বাংলাদেশ, ব্যবধান থাকে ১২ রানের। এরপর নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদরা দুর্বার বোলিং করে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে অল্প রানেই আটকালেন, তাতে লক্ষ্যও থাকলো নাগালে।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের পেসারদের তোপের মুখে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে গেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১৮৫ রান। পাকিস্তানের ইনিংসে নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আগা কেবল চল্লিশোর্ধ ইনিংস খেলেন। বাকিদের কেউ ৩০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের করা ২৭৪ রানের জবাবে লিটনের সেঞ্চুরি ও মিরাজের হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ করে ২৬২ রান।
পাকিস্তানের সবগুলো উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। আগের দিন ২ উইকেট নেওয়া হাসান আজ পাকিস্তানের তিনজন ব্যাটসম্যানকে ফেরান। ৪৩ রানে তার শিকার ৫ উইকেট, যা তার ক্যারিয়ারের সেরা ও প্রথম। বাংলাদেশের সপ্তম পেসার হিসেবে ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং তাদের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। আগুনে বোলিং করা নাহিদ নেন ৪ উইকেট, যা তার ছোট্ট তিন টেস্টের ক্যারিয়ারের সেরা। বাকি উইকেটটি নেন অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন আহমেদ।
১২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা পাকিস্তান ২ উইকেটে ৯ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে। চতুর্থ দিন অবশ্য ভালো শুরুর ইঙ্গিত মেলে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে। অবশ্য সাইম আইয়ুব ও অধিনায়ক শান মাসুদ জুটি বড় করতে পারেননি, ৩৬ রান যোগ করেন তারা। ২০ রান করা সাইমকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। এরপর শুরু হয় নাহিদের তোপ। গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হওয়া ডানহাতি এই পেসার আগুনে বোলিং শুরু করেন।
গতির ঝড় তুলে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের দিশেহারা করে তোলেন ২১ বছর বয়সী এই বোলার। ১৯ রানের ব্যবধানে পাকিস্তানের তিনজন ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান তিনি। তিনজনকেই গতির দাপটে পরাস্ত করেন তিনি, পাকিস্তানের তিন ব্যাটসম্যানই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন। ২৮ রান করা শান মাসুদ ধরা পড়েন লিটন কুমার দাসের হাতে। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে বাবর আজমকে ফেরান নাহিদ।
পরের বলে রিজওয়ানও ফিরতে পারতেন। কিন্তু পাকিস্তানের ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান স্লিপে ক্যাচ দিলেও নিতে পারেননি সাদমান ইসলাম অনিক। কিছুক্ষণ পরই সৌদ শাকিলকে ফিরিয়ে সহজ উইকেট না পাওয়ার হতাশা কিছুটা লাঘব করেন নাহিদ। তাসকিন ও নাহিদের তোপের মুখে ৮১ রানেই ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এখান থেকে হাল ধরে জুটি গড়ে তোলেন রিজওয়ান ও সালমান।
খাদের কিনারে চলে যাওয়া দলকে পথ দেখিয়ে সপ্তম উইকেটে ভালোই লড়েন এ দুজন, সপ্তম উইকেটে যোগ করেন ৫৫ রান। এই জুটি ভাঙাসহ একই ওভারে ২টি উইকেট তুলে নেন হাসান। রিজওয়ান ৭৩ বলে ৫টি চারে ৪৩ রান করেন। হাসানের আরেক শিকার মোহাম্মদ আলী। কিছুক্ষণ পর আবরার আহমেদকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের নবম উইকেট ভাঙেন নাহিদ। মীর হামজাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে ভালো বেগ দেন সালমান, শেষ পর্যন্ত ৭১ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। শেষ উইকেটে হামজার সঙ্গে ২৭ রানের জুটি গড়েন তিনি।