ইউএস ওপেন জিতে ইতালির সিনারের ইতিহাস
১৮৮১ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউএস ওপেন। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামটির ১৪৩ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাতে কতো দেশেরই টেনিস খেলোয়াড়ই তো শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন। কিন্তু তালিকায় ছিল না ইতালির কেউ। দীর্ঘ এই ওপেক্ষায় এবার ইতি টানলেন ইয়ানিক সিনার। দুর্দোণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে ঘরের ছেলে ট্রেইলর ফ্রিটসকে হতাশায় ডুবিয়ে ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে নিলেন ইতালির ২৩ বছর বয়সী এই টেনিস খেলোয়াড়।
ঘরের ছেলে বলে পুরো ম্যাচজুড়ে সমর্থন পেয়েছেন ফ্রিটস। গ্যালারিতে থাকা প্রায় সব সমর্থকই যেন তার পক্ষে ছিলেন। খেলার বিভিন্ন সময়ে কিংবা পয়েন্ট খুইয়ে কেবল প্রতিপক্ষের জন্য করা চিৎকারই কানে ভেসে এসেছে সিনারের। কিন্তু সেসবে দমানো যায়নি তাকে। অদম্য হয়ে ওঠা তরুণ এই টেনিস খেলোয়াড় শাসন জারি রেখে এগিয়ে গেছেন বিজয়ের পথে।
ফ্রিটসকে সেভাবে দাঁড়াতেই দেননি সিনার, হারিয়েছেন সরাসরি গেমে। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে প্রথম ইতালিয়ান হিসেবে ইউএস ওপেন জয়ের পথে ফ্রিটসকে ৬-৩, ৬-৪, ৭-৫ গেমে হারান সিনার। এটা তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম। এ বছরই প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বাদ পান জেতেন সিনার, জেতেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শ্রেষ্ঠত্ব। ইউএস ওপেন জিতে আরেকটি অনন্য কীর্তিতে নাম তুলেছেন সিনার। একই বছরে দুটি হার্ড কোর্টের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা সর্বকনিষ্ঠ টেনিস খেলোয়াড় এখন তিনিই।
নারী এককের ফাইনালেও হতাশ হতে হয় গ্যালারিতে হাজির হয়ে ঘরের মেয়ের জন্য গলা ফাটানো যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস ভক্তদের। যুক্তরাষ্ট্রের জেসিকা পেগুলাকে ৭-৫, ৭-৫ সরাসরি গেমে হারিয়ে শিরোপা জেতেন বেলারুশের আরিনা সাবালেঙ্কা। ফ্রিটসকে দিয়ে সেই হতাশা ঘুচিয়ে নিতে চেয়েছিলেন স্বাগতিক দেশের ভক্তরা, আশায় ছিলেন আসরটিতে ছেলেদের ২১ বছরের ট্রফি খরায় ইতি টানার । কিন্তু ফেবারিট হিসেবে ফাইনাল খেলতে নামা সিনারের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেননি ফ্রিটস।
বছরের শুরুটা দুর্দান্ত ছিল সিনারের জন্য, বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার পর মায়ামি ওপেনেও বিজয় কেতন ওড়ান তিনি। কিন্তু এরপরই আসে কঠিন সময়, কোমড়ের নিচের দিকের ইনজুরিতে বেশ ভুগতে হয় তাকে। অসুস্থতার কারণে প্যারিস অলিম্পিক থেকেও সরিয়ে নেন নাম। চোট কাটিয়ে ফিরে ইউএস ওপেনের প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট বলে বিবেচিত সিনসিনাটি ওপেন জেতেন সিনার, মেলে ছন্দে ফেরার আভাস।
অনুশীলনের পাশাপাশি মানসিক শক্তির কারণেই শিরোপা জিততে পেরেছেন বলে জানান সিনার। সাপোর্ট স্টাফদের ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'প্রতিটি দিন আমরা চেষ্টা করেছি, ভালো করে অনুশীলন করেছি, এমনকি ছুটির দিনগুলিতেও। নিজেদের ওপর ভরসা রেখেছি, সবচেয়ে জরুরি যেটা। বিশেষ করে এই টুর্নামেন্টে উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, এই খেলায় মানসিক দিকটা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ।'