৫৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ভারতকে ছোট লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
কানপুর টেস্টের বাকি একদিন, চতুর্থ দিন শেষে এই ভাবনা থেকে খুব বেশি কিছু করতে হতো না বাংলাদেশকে। ২ উইকেট হারালেও বাকি ৮ উইকেট নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যাটিং করলেই বাঁচানো সম্ভব ছিল ম্যাচটি। ড্রয়ের সান্ত্বনা নিয়ে ছাড়া যেতো মাঠ। কিন্তু শেষ দিনে উইকেট বিলিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় নামলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তাতে ফল যা হওয়ার, তাই হতে যাচ্ছে।
কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ব্যাট হাতে কেবল হতাশার গল্পই লিখলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়লেও মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে তবু অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে সেটাও হলো না, দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৫ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ৪৭ ওভারে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। নাজুমল হোসেন শান্তর দল ভারতকে দিয়েছে ৯৫ রানের লক্ষ্য। এই রান তোলার জন্য পুরো দুটি সেশন পাচ্ছে স্বাগতিকরা। তাদের প্রথম ইনিংসের দিকে তাকালে এই রান মামুলিই মনে হওয়ার কথা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৪.৪ ওভারে ২৮২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ভারত, এই ইনিংসে ৫২ রানের লিড পায় তারা।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় ইনিংসে আরও করুণ দশাই হলো বাংলাদেশের। আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেওয়া সফরকারী দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেউ-ই সেভাবে ব্যাট চালাতে পারলেন না। হাফ সেঞ্চুরি করা সাদমান ইসলাম অনিকের পর মুশফিকুর রহিম কিছুটা লড়লেও তা যথেষ্ট হয়নি দলের জন্য। তাই হারের শঙ্কা নিয়েই যেতে হলো মধ্যাহ্ন বিরতিতে।
বোলারদের নিয়ে চেষ্টা করা মুশফিক অবশ্য শেষ পর্যন্ত চরম হতাশ করেছেন। খালেদ আহমেদকে নিয়ে লড়াই করে যাওয়া ডানহাতি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান বেশিরভাগ সময়ে স্ট্রাইকে থাকতে চেয়েছেন, ওভারের শেষ বলে নিয়েছেন এক রান। সেই তিনিই ভারতের পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ বলে তুলে মারতে গিয়ে বোল্ড হন মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে। বিরতিতে যাওয়ার আগে শেষ বলে নিজের উইকেটটি বিলিয়ে দেন মুশফিক।
৬৩ বলে ৭টি চারে ৩৭ রান করেন তিনি। এর আগে উল্লেখ করার মতো রান করেন সাদমান, বাঁহাতি এই ওপেনার ১০১ বলে ১০টি চারে ৫০ রান করেন। ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে পঞ্চম দিনে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই মুমিনুল হককে হারায়। আগের ইনিংসে অনেকগুলো সুইপ শট খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান আজ একই শটে লেগ স্লিপে ধরা পড়েন, ২ রান করে ফেরেন তিনি।
দলের দুঃসময়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন অধিনায়ক শান্তও। বলের লাইন-লেংথ না দেখে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন ১৯ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এর আগে সাদমান-শান্তর জুটি থেকে আসে ৫৫ রান। ৯১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এখান থেকে যে উইকেট বৃষ্টি শুরু হয়, তা আর থামেনি। ৯১ রানে ৪ উইকেট থেকে ৯৪ রানে ৭ উইকেট হারায় তারা। অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরে যান সাদমান, লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসান।
লিটন ১ রান করেন, সাকিব রানের খাতা খুলতে পারেননি। বোলার রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। মুশফিকের সঙ্গে যোগ দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ৯ রান করে থামেন। ভারতের তিন বোলার বুমরাহ, অশ্বিন ও জাদেজা মিলেই বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন। এ তিন জনই ৩টি করে উইকেট নেন। বাকি উইকেটটি পান পেসার আকাশ দীপ।