তিন সেঞ্চুরিতে রান পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা দক্ষিণ আফ্রিকার
তাইজুল ইসলামকে ছক্কা মেরে চওড়া হাসিতে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন উইয়ান মুলডার, দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রেসিং রুমে তখন উচ্ছ্বাস। সবাই দাঁড়িয়ে উদযাপন করলেন। না, চট্টগ্রাম টেস্টের ফল আসেনি। আজ কেবল দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছে। প্রোটিয়াদের এই উচ্ছ্বাস অপেক্ষা ফুরানোর। রান পাহাড়ে তারা আগেই চড়েছে, অপেক্ষা ছিল মুলডারের সেঞ্চুরির। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর পরই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৬ উইকেটে ৫৭৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে প্রোটিয়ারা। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও এই চট্টগ্রামে। ২০০৮ সালে ৭ উই ৫৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল তারা।
সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা রান পাহাড়ে পড়েছে টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টান স্টাবস ও উইয়ান মুলডারের ব্যাটে, তিনজনই সেঞ্চুরি করেছেন। আছে দুটি হাফ সেঞ্চুরিও, পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেলেন ডেভিড বেডিংহাম ও সেনুরান মুথুসামি। ব্যর্থ হয়েছেন কেবল কাইল ভেরেইনা ও রায়ান রিকেলটন। প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান ভেরেইনা আজ রানের খাতা খুলতে পারেননি, রিকেলটন করেন ১২ রান। এর আগে অধিনায়ক এইডেন মার্করাম করেন ৩৩ রান।
২ উইকেটে ৩০৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এদিন আরও কিছুটা পথ পাড়ি দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তৃতীয় উইকেটে ১১৬ রান যোগ করেন তারা। ৫৯ রান করা বেডিংহামকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাইজুল। ৫ রান পর বাংলাদেশ স্পিনারের শিকার ২৬৯ বলে ১২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৭৭ রান করা ডি জর্জি। এরপর প্রতিপক্ষকে কোনো রান যোগ করতে না দিয়ে তাইজুল তুলে নেন কাইল ভেরেইনার উইকেট।
আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার যাওয়া ২ উইকেট নেন তাইজুল, আজও প্রথম তিন উইকেট নেন তিনি। ভেরেইনাকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। টেস্টে এটা তাইজুলের ১৪তম ৫ উইকেট, যা বাংলাদেশের বোলারদের মধ্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯ বার ৫ উইকেট নিয়ে সবার উপরে সাকিব আল হাসান। তৃতীয় স্থানে আরেক স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, আট বছরের ক্যারিয়ারের ১০ বার ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
সপ্তম উইকেটে ১৮৬ বলে অবিচ্ছন্ন ১৫২ রানের জুটি গড়েন মুলডার ও মুথুসামি। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুলডার ১৫০ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় হার না মানা ৬৮ রান করেন মুথুসামি। প্রথম দিন ১০৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন স্টাবস। দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ উইকেটের ৫টি নেন তাইজুল, বাকি উইকেটটি পান নাহিদ রানা। সুবিধা করতে পারেননি হাসান মাহমুদ, মেহেদী হাসান মিরাজরা।