দুই ‘ভালো’ বন্ধুকে টেনশন কমাতে বললেন ট্রাম্প
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের তরফ থেকে “চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বাক্যাবলী ব্যবহার ও ভারতবিরোধী সহিংসতা উস্কে দেবার” বিষয়টি সামনে নিয়ে এসে আঞ্চলিক শান্তির জন্য তা সুখদায়ক হবে না বলে মনে করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে মোদির ফোনালাপের অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রাম্প ফোন করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। তাঁকে “টেনশন কমাতে নমনীয় ভাষা ব্যবহারের” পরামর্শ দিলেন তিনি।
দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুটি ফোনালাপের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁর দেশের অগ্রাধিকার হল এ অঞ্চলে উত্তেজনা কমানো।
হিন্দুস্তান টাইমস জানাচ্ছে, গতকাল সোমবার এক টুইটে মোদি ও ইমরানের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপের কথা তুলে ধরে ট্রাম্প একটি টুইট করেছেন। তাতে তিনি লিখেন, “আমার দুই প্রিয় বন্ধু, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বাণিজ্য, কৌশলগত অংশীদারিত্ব, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি, কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে দু’দেশের একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে কথা বলেছি।”
“খুব কঠিন পরিস্থিতি, তবে কথাবার্তা ভালো হয়েছে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গে ট্রাম্পের এ ধরনের বাক্যচয়ন নতুন কিছু নয়। তিনি আগেও মোদিকে ’ভালো বন্ধু’ ও ‘অসাধারণ ভদ্রলোক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। চীনের নেতা শি জিনপিং ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছেন তিনি। গত সোমবারের এক টুইটে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ঢুকেছেন ট্রাম্পের প্রশংসাধন্যদের তালিকায়।
কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রীকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, মানে তাঁকে ’ভালো বন্ধু’ বলা ট্রাম্পের সাবেকী আচরণের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল। কারণ ২০১৮ সালে এক বিধ্বংসী টুইটে ট্রাম্প পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন যে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে “কেবলই মিথ্যাচার ও প্রতারণামূলক আচরণ” ফিরিয়ে দিচ্ছে।
মোদির সঙ্গে সকালবেলার ফোনালাপের পর ট্রাম্প চার দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ফোন করলেন ইমরানকে। এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, “প্রেসিডেন্ট পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছেন। দু’পক্ষকেই সংযত হতে বলছেন তিনি। পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহায়তা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করতে পাক প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট একমত হয়েছেন।”
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফোনালাপে মোদি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করেই ’চরম বাক্যবাণ’ ব্যবহারের অভিযোগ করেছিলেন। ট্রাম্প সেই ফোনালাপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নিরসন করে আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।
ইমরানের সঙ্গে ফোনালাপেও তিনি একই বিষয়ে জোর দিয়েছেন বলে জানা গেছে হোয়াইট হাউস থেকে প্রদত্ত বিবৃতিতে।