যুদ্ধাপরাধ: রাজাকার সামাদের ফাঁসির রায়
একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, লুন্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় রাজশাহীর পুঠিয়ার আব্দুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ কে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আসামির উপস্থিতিতেই ফাঁসির এই দন্ডাদেশ দেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা চারটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ে আব্দুস সামাদের অপরাধকে ‘এনিমি অব দ্য অল হিউম্যান রাইটস’ বলেছে আদালত।
২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধের এক মামলায় আব্দুস সামাদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার সাক্ষীদের জেরা শেষে গত ৪ থেকে ৮ জুলাই দুই পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক শুনানি করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর ছিলেন ঋষিকেশ সাহা ও জাহিদ ইমাম এবং আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে আদালত। এরপর মঙ্গলবারের (২৭ আগস্ট) রায়ে ফাঁসির দন্ডাদেশ দেয়া হয় সামাদকে।
আব্দুস সামাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়ার ত্রিমোহনী বাজার এলাকায়।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের সময় সামাদের বয়স ছিল ২০। যুদ্ধের পর সে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, একসময়ের মুসলিম লীগার সামাদ মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যোগ দেন এবং রাজাকার বাহিনীতে ভেড়েন।
সেখানে আরও বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় এই রাজাকার পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়ে পুঠিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান এবং চারজন সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘরে লুণ্ঠন এবং ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগে অংশ নেন।