২০,০০০ বছর আগেই পূর্ব এশিয়ায় অস্তিত্ব ছিল করোনার: অস্ট্রেলিয়ান গবেষণা
সম্ভবত ২০,০০০ বছর আগেই তাণ্ডব চালিয়েছিল করোনাভাইরাস মহামারি। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ারের একটি প্রতিবেদনে ঐ গবেষকেরা দাবি করেছেন, সেই সময় পূর্ব এশিয়ায় মহামারির ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। আধুনিক চীন, জাপান এবং ভিয়েতনামের মানুষের ডিএনএতে এখনও সেই করোনা প্রজাতির ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পূর্ব এশিয়া থেকে যে একাধিক করোনাভাইরাস মহামারির উৎপত্তি হয়েছিল, তার স্বপক্ষে একাধিক প্রমাণ মিলেছে। প্রাচীন করোনা প্রজাতির কোনও ভাইরাস বা মানুষের দেহে যে রকম করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে, সেরকমভাবেই ভিন্ন একটি ভাইরাসের জেরে পূর্ব এশিয়ার প্রাচীন মানুষের মধ্যে মহামারি ছড়িয়ে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে প্রাচীনকালের ভাইরাসের বিষয়ে জানতে পারলে বিবর্তনমূলক তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যা আরও ভালোভাবে ভবিষ্যতে মহামারির পূর্বাভাস দিতে পারে।
কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়াসিন সুইলমি এবং রে টোবলারের সেই গবেষণা। তাদের দাবি, পূর্ব এশিয়ায় বর্তমানে যে মানুষরা বসবাস করেন, তাদের ৪২টি জিনে করোনাভাইরাস প্রজাতির জিনগত পরিবর্তনের প্রমাণ মিলেছে। সুইলমি এবং টোবলার জানিয়েছেন, তারা বিশ্বের ২৬টি জাতির ২,৫০০-এর বেশি জিন নিয়ে বিশেষ ধরনের বিশ্লেষণ করেছেন। তার ভিত্তিতে মানুষের ৪২টি ভিন্ন জিনে বিশেষ ধরনের প্রোটিনের সংকেত পাওয়া গিয়েছে।
তারা বলেছেন, 'এই ভাইরাস ইন্টারেকটিং প্রোটিনসের (ভিআইপি) সংকেত পাওয়া গিয়েছে মানুষের মাত্র পাঁচটি জাতির ক্ষেত্রে। তারা সবাই পূর্ব এশিয়ার বাসিন্দা। যা সম্ভবত করোনাভাইরাস প্রজাতির বিচরণের ক্ষেত্র ছিল। সেই তথ্য অনুযায়ী, আধুনিক যুগের পূর্ব এশিয়ার মানুষরা প্রায় ২৫,০০০ বছর আগেই করোনাভাইরাসের দাপটের সম্মুখীন হয়েছিলেন।'
গবেষকদের দাবি, ৪২টি ভিআইপি মূলত ফুসফুসে প্রভাব ফেলত। এই অঙ্গটিই করোনার দ্বারা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু তাই নয়, তারা দাবি করেছেন, ঐ ভিআইপিগুলোর সঙ্গে যে সরাসরি সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2) ভাইরাসের যোগ ছিল, সে বিষয়েও নিশ্চিত তারা। এই ভাইরাসটির কারণেই বর্তমান মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দুই গবেষক দাবি করেছেন, কয়েকটি ভিআইপির জিন বর্তমানে করোনার চিকিৎসার কাজে ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে কিংবা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অংশ হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।