অ্যানিমেল কেয়ারটেকার: চিড়িয়াখানার প্রাণীদের সঙ্গে প্রাণ হাতে নিয়ে জীবন পার
২০০২ সালের এক দুপুরে বরাবরের মতো ভালুকের খাঁচায় কাজ করছিলেন অ্যানিমেল কেয়ারটেকার ইসমাইল হাওলাদার। ভালুককে খাওয়ানোর সময় হলে খাবার তৈরি করতে খাঁচার ভেতরে ঢোকেন তিনি। সাবধানেই কাজ করছিলেন। খাবার তৈরি শেষে পেছনে তাকাতেই চমকে উঠলেন। ভালুকটা দাঁড়িয়ে আছে ঠিক তার পেছনে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ওপর হামলে পড়ল প্রাণীটি। এমন অতর্কিত আক্রমণে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন ইসমাইল। সারা শরীর ততক্ষণে রক্তাক্ত। নিজেকে রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও কোনো লাভ হলো না। অসহায় আত্মসমর্পণ করে মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি।
নিয়মিত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন ইসমাইলের মতো অ্যানিমেল কেয়ারটেকারেরা। প্রায় সময়ই কোনো না কোনো বিপদের মুখোমুখি হতে হয় তাদের। কাজের সময় মনোযোগের হেরফের হলেই প্রাণসংহারের ঝুঁকি পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় পশু-পাখি দেখাশোনার কাজে নিযুক্ত অ্যানিমেল কেয়ারটেকারদের কর্মজীবনের নানা দিক নিয়ে জানতে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
প্রাণী ও প্রশিক্ষণ
ইসমাইল হাওলাদারের মৃত্যুর সে স্মৃতি এখনো তাড়া করে বেড়ায় অন্যান্য কেয়ারটেকারদের। তাই খাঁচায় ঢোকার আগেই সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নেন বারবার। তবুও মনে চেপে বসা ভয়কে জয় করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় তাদের কাছে। কিন্তু তা-তে কি আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলা যায়!
সব ধরনের প্রাণীর দেখাশোনার কাজই করতে হয় তাদেরকে। ঠিকঠাক সময়ে খেতে দেওয়া, খাঁচা বা ঘের পরিষ্কার করা, গোসল করানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, সুখ-অসুখের দিকে খেয়াল রাখাসহ নানা কাজে দিন পার করেন তারা।
অষ্টম শ্রেণি পাশ হলেই এ কাজের জন্য আবেদন করা যায় । এক্ষেত্রে দরকার নেই কোনো অভিজ্ঞতার। আবেদনের পর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিতে হয়। দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ারা নিয়োগ পান। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকেই নির্ধারণ করা হয় কাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হবে। শুরুর দিকে কঠিন কোনো দায়িত্ব না দিয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ প্রাণীর খাঁচায় কাজ করতে দেওয়া হয়। এরপর ব্যবস্থা করা হয় প্রশিক্ষণের।
কেয়ারটেকার মিন্টু হাওলাদার তার ৫৩ বছর বয়সের ১৮ বছর কাটিয়েছেন চিড়িয়াখানায়। বর্তমানে জলহস্তীর খাঁচায় তার কাজ। ২০০৫ সালে আবেদনের পর দুই পরীক্ষাতেই সবার চেয়ে বেশি নাম্বার পেয়ে পাশ করেন তিনি। চাকরির শুরুতে তার দায়িত্ব পড়ে বানরের খাঁচায়। প্রশিক্ষণ শুরু হলে তিনি বুঝতে পারেন খুব একটা সহজ নয় এটা। নিয়মিত বানরের মল-মূত্র পরিষ্কার করা, খাবার দিতে গিয়ে নানা সময়ে খামচির শিকার হওয়ার বিষয় খুব পীড়া দিতে থাকে তাকে।
এখানে আসার আগে একটি বেসরকারি চাকরি করতেন মিন্টু। আগের চাকরিতে এসব কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি বলে একসময় সেটি ছেড়ে আসার আক্ষেপ করতেন বারবার। 'প্রথমে কিছু বুঝিনি কী কী করতে হবে। শুরুর দিকে এত কষ্ট লাগত যে কান্না করে দিতাম। আর আগের চাকরির জন্য আফসোস হতো শুধু,' বলেন তিনি।
ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়েই হাত পাকা করা হয় অ্যানিমেল কেয়ারটেকারদের। প্রথমে নিতে হয় তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ। বছরে ২–৩ বার সপ্তাহব্যাপী এ প্রশিক্ষণ চলে। বিসিএস কর্মকর্তা বা ভেটেরিনারি সার্জনই এ প্রশিক্ষণ দেন। কী কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে, কী করা যাবেনা, কোন প্রাণীর জন্য কোন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, প্রাণীর খাদ্যাভ্যাস, আচার-আচরণ, সুস্থতা-অসুস্থতা ইত্যাদি সকল বিষয়ে কেয়ারটেকারদের জানান তারা। এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন জাপান থেকে।
এরপরের ধাপ ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ। পূর্বের কর্তব্যরত অভিজ্ঞ কেয়ারটেকারই শেখান এসব কাজ। দীর্ঘ এক মাস ধরে চলতে থাকে এ প্রশিক্ষণ। কেউ এক মাসেও কাজ ঠিকঠাক শিখতে না পারলে বেড়ে যায় প্রশিক্ষণের সময়। যদি কোনো প্রাণী সম্পর্কে নতুন তথ্য গবেষণায় উঠে আসে, তখন পুরোনো সব পদ্ধতি বাদ দিয়ে নতুন তথ্যের আলোকে কাজ শেখানো হয় কেয়ারটেকারদের।
দৈনিক দায়িত্ব
ভোর হলেই শুরু হয়ে কেয়ারটেকারদের কাজকর্ম। সকাল ৭টায় শুরু করে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা কাজ করেন সবাই। সপ্তাহের একদিন সকল কেয়ারটেকারকে সকাল-বিকাল দুই শিফটে কাজ করতে হয়। তখন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে খাঁচার দেখভাল। রাতে পশু-পাখি দেখার দায়িত্বে থাকেন নিরাপত্তা প্রহরীরা।
মোট ৪টি প্রাণী-শাখায় বিভক্ত চিড়িয়াখানা — ক্ষুদ্র প্রাণী/সরীসৃপ শাখা (কুমির, সাপ, বানর, হনুমান, কচ্ছপ, ভোঁদড়, বিড়াল ইত্যাদি), বৃহৎ প্রাণী শাখা (হাতি, জলহস্তী, জিরাফ, জেব্রা, গয়াল, হরিণ ইত্যাদি), মাংসাশী শাখা (বাঘ, চিতা, সিংহ, ভালুক, বনবিড়াল, কুকুর, হায়েনা, শিয়াল ইত্যাদি) এবং পাখি শাখা।
প্রাণীভেদে কেয়ারটেকারদের কাজের ধরনও হয় বিভিন্ন। খাবার-দাবার, সেবা-যত্ন, পরিচর্যা সবকিছুই আলাদা আলাদা নিয়ম মেনে করতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ প্রাণীর খাঁচায় কাজ করেন দুজনের বেশি কেয়ারটেকার। অনেক সময় একজনের অধীনে একাধিক খাঁচা দেখভাল করার দায়িত্বও দেওয়া হয়। এতে কাজের চাপ বেড়ে হয় দ্বিগুণ। এমনকি প্রায়ই সাপ্তাহিক ছুটি থেকে বঞ্চিত হন তারা।
বিপদ ঘটার শঙ্কায় প্রতিটি খাঁচার ভেতরে রয়েছে দুটি কম্পার্টমেন্টের ব্যবস্থা। দুই কক্ষের মাঝখানে থাকে একটি দেয়াল, তার একপাশে ছোট্ট একটি পকেট গেইট। এটি দিয়েই জন্তুকে এপাশ-ওপাশে সরানো হয়। নিয়ম হলো, যদি খাঁচার ডানপাশের কম্পার্টমেন্টে কোনো বাঘ-সিংহ থাকে, তবে কেয়ারটেকার বামপাশের অংশে ঢুকে খাবার তৈরি, খাঁচা পরিষ্কার ইত্যাদি কাজ করবেন। কাজ শেষে মূল গেইট দিয়ে বের হয়ে যান কেয়ারটেকার। এরপর মাঝখানের পকেট গেইট খুলে দেওয়া হয়। তারপর অপর পাশ থেকে বাঘটিকে একটি সুচালো রড দিয়ে খোঁচা মেরে এপাশে এনে পকেট গেইট লাগিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে অপর পাশ খালি হয়ে গেলে পরদিন কেয়ারটেকার সে পাশেই খাবার দেওয়া, পরিষ্কার পরিছন্নতার কাজ সারেন।
কেয়ারটেকারদের নিরাপত্তার জন্য এসব ব্যবস্থা রাখা হলেও নিরাপত্তা পুরোপুরি করা নিশ্চিত করা যায় না। খাঁচার ভেতরে দুটি আলাদা কম্পার্টমেন্ট থাকা স্বত্ত্বেও প্রায় নানা দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
বিপদ বারবার
কেয়ারটেকার এনামূল হক ২৭ বছর ধরে এ কাজ করছেন। প্রতিবার খাঁচায় ঢোকার আগে ভালোভাবে দেখে নেন সবকিছু। কিন্তু একদিন ভুল করে বসেন। কাজ করতেন বানরের খাঁচায়। খাবার দেওয়ার সময় আনমনে বানরভর্তি কম্পার্টমেন্টে ঢুকে পড়েন। কালবিলম্ব না করে বানরের দল হামলে পড়ে তার ওপর। এ ঘটনায় এনামূলকে হাসপাতালে নেওয়া হলে শরীরের দশ জায়গায় ২৮টি সেলাই পড়ে তার।
মিন্টু হাওলাদারের ওস্তাদ কেয়ারটেকার কাজ করতেন হনুমানের খাঁচায়। বেশ সখ্যও তৈরি হয়েছিল প্রাণীগুলোর সঙ্গে। প্রায় সময় খাঁচায় ঢুকে যেতেন, বাদাম-কলা খেতে দিতেন। গান গাইতে গাইতে কাজ করতেন। কিন্তু একদিন খাবার দিতে ভেতরে ঢুকলে একটি হনুমান তার পায়ে কামড় দিয়ে বসে। থেতলে ফেলে পায়ের মাংস। যন্ত্রণায় চিৎকার দিতে থাকেন তিনি। আশপাশের কেয়ারটেকারেরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
কোনো প্রাণীকে শুয়ে থাকা বা বিশ্রামের সময়ে জোর করে ডেকে তোলা হলেও হিংস্র হয়ে উঠে। ভেটেরিনারি সার্জন মো. সাদ্দাম পাটোয়ারী বলেন, 'প্রাণীর ঋতুস্রাবের সময় শুরু হলে, প্রয়োজনের তুলনায় খাবারের পরিমাণ কম থাকলে, বিশ্রামের সময়ে জাগানো বা অকারণে বিরক্ত করা হলে প্রাণী হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। এসব ছাড়াও মাঝেমধ্যে অহেতুক হিংস্র আচরণও করতে পারে। তাই যতই সখ্য থাকুক, পোষ মানিয়ে নিক — সতর্ক থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।'
অ্যানিমেল কেয়ারটেকার উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল এক যুগ পার করেছেন চিড়িয়াখানায়। বর্তমানে গয়াল, গাধা, হরিণ ইত্যাদি প্রাণীর খাঁচায় কাজ করেন তিনি। এ প্রাণীগুলো অসুস্থ হলে তাকে প্রায়ই দৌড়াদৌড়ি করে ধরে আনতে হয় চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। মাংসাশীদের চেতনানাশক দিয়ে ধরা হলেও সব প্রাণীর ক্ষেত্রে সেটি করা হয় না। অনেক সময় প্রাণীরা জোরে শিং, পা বা মাথা দিয়ে আঘাত করে বসে। এতে গুরুতর আহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
'যদি একটা বিড়াল বা কুকুর পোষেন আর তারা যদি খামচি দেয়, ফেলে দেন? মায়া বলেও তো কিছু আছে।'
ঝুঁকি নেই এমন কাজ আছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, 'গাধার খাঁচায়ও যদি কেউ কাজ করে তাও এটা চিন্তা করাই যাবে না যে, সেখানে ঝুঁকি নেই। পশুদের চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করাই যাবেনা।'
মিন্টুর ভাষ্যমতে ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০টিরও বেশি বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েছেন অ্যানিমেল কেয়ারটেকারেরা। এ কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়েছেন। মিন্টু বলেন, 'আমরা জানি, আমাদের সামান্য ভুল হলে মরেও যেতে পারি। কিন্তু দায়িত্ব তো দায়িত্বই।'
সাপে সাবধান
সরীসৃপ এবং মাংসাশী শাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি। ৪টি প্রাণী-শাখার জন্য পুর্ব অভিজ্ঞতা দেখা না হলেও সাপের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম। অভিজ্ঞতা এখানে মুখ্য। এটি ছাড়া সাপের দেখাশোনা করা, তাদের আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয় বলেই এমন বন্দোবস্ত।
এ শাখায় কর্মরত কেয়ারটেকারদের একজন মো. মোস্তাফিজুর রহমান কাজল। ১০ বছর ধরে কাজ করছেন সাপের খাঁচায়। প্রায়ই বিষধর সাপের ছোবলের শিকার হতে হয় তাকে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রমাণও স্পষ্ট — সাপের কামড়ের ছোপ ছোপ দাগ।
একদিন দুই ব্যাগ রক্ত দিয়ে এসে কাজ করছিলেন কাজল। দুর্বল বোধ করছিলেন খুব। বোধহয় সে কারণেই পুরোপুরি সতর্ক ছিলেন না। ভুল করে বসলেন — বিশ্রাম নিতে খাঁচার এক কোনে বসে পড়েন। ঝিমোতে গিয়ে তার একটা হাত বিষধর সাপের মুখে পড়ে যায়। দেরি না করে ছোবল দিয়ে বসে সাপটি। ব্যথা আর যন্ত্রণায় কাতর কাজল গোঙাতে গোঙাতে এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। দুই সপ্তাহ হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল তাকে।
বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাপ শীতনিদ্রায় যায়। এ সময়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায় না। একা থাকতে চায়, উষ্ণ রাখতে চায় নিজেদের। কেউ এ সময়ে ধরতে গেলে বা জাগাতে চাইলে ঘটতে পারে ভয়াবহ বিপদ। অভিজ্ঞ হলে এ বিপদের ঝুঁকি কমানো যায়। এতকিছুর পরেও অনেকসময় কর্মরত কেয়ারটেকারদের নিতে হয় অ্যান্টিভেনম ডোজ। এতে বিপদমুক্ত থাকা যায় কিছুটা।
তবে সেখানেও আছে সমস্যা। কেয়ারটেকার কাজল বলেন, অ্যান্টিভেনম ডোজ নিয়মিত নিলেও ঝুঁকি আছে। একটা সময় এ ডোজ মাদকের মতো কাজ করতে থাকে এবং মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে। তাই এটি না নিয়ে সাবধান থেকে কাজ করাই ভালো।'
পারিশ্রমিক পরিতাপ
তবে কাজের চাপ এবং ঝুঁকি থাকার পরেও যে পারিশ্রমিক তাদের দেওয়া হয় তা বেশ অল্পই। মূল বেতন আট হাজার ২০০ টাকার সঙ্গে অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ হাজারে। তবে প্রতিবছর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাড়ে ১,৩০০ টাকা।
১৮ বছর আগে তিন হাজার টাকার বেতনে যে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন মিন্টু, বর্তমানে তা সর্বোচ্চ বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার টাকায়। অবসর নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে তার। এত কম বেতন নিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, 'এমন কঠিন একটা কাজের জন্য যে বেতন আমরা পাই, সে টাকা দিয়ে না চলে সংসার, না যায় চালানো বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ।'
রোদ, বৃষ্টি, কুয়াশা — কখনোই দায়িত্বে অবহেলার অবকাশ নেই অ্যানিমেল কেয়ারটেকারদের। পরিস্থিতি যা-ই হোক, আবহাওয়া যেমনই থাকুক, কাজে মনোযোগ থাকতে হবে শতভাগ। বিশ্রামের সুযোগ কম। ছুটিছাঁটাও বিরল, কালেভদ্রে।
তারপরও কেউ কেউ এ কাজ করছেন ভালোবেসে। পেশা হলেও কেবল পেশাদারিত্বের খাতিরে পশুপাখির যত্ন করেন, তা নয়। দীর্ঘদিন এসব প্রাণীর সঙ্গে থেকে তৈরি হয়েছে মায়া।
'যদি একটা বিড়াল বা কুকুর পোষেন আর তারা যদি খামচি দেয়, ফেলে দেন? মায়া বলেও তো কিছু আছে,' বলেন মিন্টু হাওলাদার।