বগুড়ায় টিসিবি পণ্যের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম
ভোজ্য তেল ও ডালসহ অন্যান্য পণ্য চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। ডিলাররা বলছেন, বরাদ্দ কম থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক তৃতীয়াংশ চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খুব দ্রুত ডিলারদের আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে। শুধু শহরে নয়, গ্রামেও এ সুবিধা সম্প্রসারণের চিন্তা ভাবনা করছে সরকার।
২৩ মার্চ থেকে বগুড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে টিসিবির ভোগ্য পণ্য বিক্রি শুরু হওয়ার পর প্রতিদিনই বাড়ছে চিনি, ডাল, তেল ও ছোলাসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা।
টিসিবি ডিলার কালাম ট্রেডার্সের ম্যানেজার আতাউর রহমান জানান, দুইদিন পর পর তার প্রতিষ্ঠান খোলা বাজারে বিক্রির জন্য টিসিবির যেসব পণ্য পান, তা দিয়ে অধিকাংশ মানুষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। যে কারণে অনেকেই ভোর বেলা এসে লাইনে দাঁড়িয়েও তাদের চাহিদামতো পণ্য পাচ্ছেন না।
টিসিবি থেকে দুইদিন পরপর সাধারণ ডিলারদের বরাদ্দ দেওয়া হয় ১০০ কেজি চিনি, ২০০ কেজি ডাল, ১ হাজার লিটার তেল, ৫০০ কেজি ছোলা ও ৭০ কেজি খেজুর। চিনি ও ডাল ৫০ টাকা কেজি, ৮০ টাকা লিটার সয়াবিন তেল, ৬০ টাকা কেজি ছোলা আর ১২০ টাকা কেজি খেজুর বিক্রি করা হয় ট্রাকে করে।
বিধি অনুযায়ী একজন ক্রেতা ৪০০ গ্রামের বেশি খেজুর পাবেন না। ডালের ক্ষেত্রেও ৬০০ গ্রাম নির্ধারিত। চিনি দুই কেজি, সয়াবিন দুই লিটার আর ছোলা পাবেন এক কেজি করে।
বগুড়া শহরের চকলোকমান এলাকার নাজমা বেগম (৪৫) আলতাফুনেচ্ছা খেলার মাঠে লাইনে দাঁড়িয়েছেন সকাল ৭টায়। লাইনে আগে যতজন রয়েছেন, তাতে শেষ পর্যন্ত কিছু পাবেন কি না- তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তার।
দুই সপ্তাহ আগে সার্কিট হাউসের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ৪-৫ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর কর্তব্যরত পুলিশ জানায়, তাকে যেতে হবে মালতি নগর এলাকার বউ বাজারে। সেখানেও ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে কিছুই পাননি তিনি।
আরেক গৃহবধু শাহনাজ বেগম (৪০) শহরের ফুলবাড়ি এলাকা থেকে এসেছে পড়েছেন লাইনের শেষের দিকে। কোলের শিশুকে নিয়ে তিনি গত দুইদিন ঘুরছেন; কিন্তু কিছুই পাননি।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহামদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে এরইমধ্যে জানানো হয়েছে।
শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গ্রাম পর্যায়ে টিসিবি পণ্যের সুবিধা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া চলছে।