বান্দরবানে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা
বান্দরবান সদর উপজেলায় ঘরে ঢুকে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
মঙ্গলবার সকালে শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বাঘমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সবাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সংস্কারপন্থী) দলের নেতাকর্মী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বান্দরবান সদর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ''সকালে সশস্ত্র গ্রুপের কয়েকজন ঘরে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালালে ঘটনাস্থলে সংস্কারপন্থী দলের ছয়জন মারা যায়।''
নিহতরা হলেন- রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যা (৬০), বিমল কান্তি চাকমা ওরফে প্রজিত চাকমা (৬৫), ডেভিড মারমা (৫০), জয় ত্রিপুরা (৪০), জিতেন ত্রিপুরা (৪২) এবং মিলন চাকমা (৬০)।
এর মধ্যে রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যা জেএসএস সংস্কারপন্থী দলের বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি এবং বিমলকান্তি চাকমা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত তিন জনের মধ্যে রয়েছে সংস্কারপন্থী দলের সদস্য বিদ্যুৎ চাকমা (৩৭), নিরু চাকমা (৫০) এবং প্রত্যক্ষদর্শী হ্লাওয়ংচিং মারমা (২২)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং দলটির সদস্য ওয়াইমং মারমা বলেন, সকালে খাবারের জন্য রতন সেন ঘরে রান্না করছিলেন। এ সময় ঘরে দলের ৯ সদস্য উপস্থিত ছিল।
''সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হঠাৎ করে 'পোশাকধারী' দু'জন লোক ঘরে ঢুকে এলোপাতারি গুলি করে পাশের ধানক্ষেত দিয়ে চলে যায়।'' তবে হামলাকারী ছয়-সাত জন থাকতে পারে। কিন্তু গুলি করা অবস্থায় দু'জনকে দেখেছেন বলে জানান ওয়াইমং মারমা।
রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যার স্ত্রী মিনিপ্রু মারমা বলেন,'' সকালে রতন সেন নিজেই বাজার করেছিলেন। আমি ঘরের ভেতরে কাজে ছিলাম। আর বাইরে রান্নার আয়োজন চলছিল। গুলির শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি আমার স্বামীসহ কয়েকজন লোক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উঠানে পড়ে আছে। পরে ঘরের পিছনে ধানক্ষেত দিয়ে দু'জনকে পালিয়ে যেতে দেখি।''
সংস্কারপন্থী দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা জানান, ঘটনাস্থলে তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। ''ঘরের ভিতর থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে গুলির শব্দ শুনি। এ সময় মাটিতে শুয়ে পড়লে প্রাণে বেঁচে যাই।''
এ ঘটনায় জনসংহতি সমিতির মূল দলকে দায়ী করেন তিনি। তবে যোগাযোগ করা হলে জনসংহতি সমিতির মূল দলের জেলা নেতাকর্মীদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এ হত্যাকাণ্ডে কারা কীভাবে জড়িত, ঘটনার প্রকৃত রহস্য তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান বান্দরবান সদর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্তের পর বলা যাবে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।