রপ্তানিখাতের শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা
করোনা ভাইরাস মহামারীর আঘাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে দেশের রপ্তানিমুখী খাতের শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "করোনাভাইরাসের কারণে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের শিল্প উৎপাদন এবং রপ্তানি বাণিজ্যে আঘাত আসতে পারে। এই আঘাত মোকাবেলায় আমরা কিছু আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।"
তিনি বলেন, "রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আমি ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি। এ তহবিলের অর্থ দ্বারা কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে।"
করোনার থাবায় বিশ্বব্যপী অর্থনীতি হুমকির মুখে থাকায় তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে যে খাত থেকে সেই তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা এই খাতটির আয় শূন্যের অংকে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই প্রনোদনার ঘোষণায় কার্যত আশার সঞ্চার ঘটেছে এই খাত ঘিরে।
শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের বিষয় ভাষণে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যবসায়-বান্ধব বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী জুন মাস পর্যন্ত কোন গ্রাহককে ঋণ খেলাপি না করার ঘোষণা দিয়েছে। রপ্তানি আয় আদায়ের সময়সীমা ২ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে। একইভাবে আমদানি ব্যয় মেটানোর সময়সীমা ৪ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে।"
এছাড়া ভাষণে সাধারণ মানুষের সুবিধায় মোবাইলে ব্যাংকিংয়ে আর্থিক লেনদেনের সীমা বাড়ানো; বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস বিল পরিশোধের সময়সীমা সারচার্জ বা জরিমানা ছাড়া জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনার এই সংকটকালে বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "এবারের স্বাধীনতা দিবস এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হচ্ছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গোটা বিশ্ব এখন বিপর্যস্ত।
"ধনী বা দরিদ্র, উন্নত বা উন্নয়নশীল, ছোট বা বড়- সব দেশই আজ কমবেশি নভেল করোনা নামক এক ভয়ঙ্কর ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশও এ সংক্রমণ থেকে মুক্ত নয়।"
সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "মাত্র ১৪ দিন আলাদা থাকুন। আপনার পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশী, এলাকাবাসী ও সর্বোপরি দেশের মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এসব নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। যতদূর সম্ভব ঘরে থাকবেন। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। বাইরে জরুরি কাজ সেরে বাড়িতে থাকুন।"