সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মারা গেছেন
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম আর নেই।
আটদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শনিবার (১৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মোহাম্মদ নাসিমের একান্ত সহকারী সচিব মীর মোশারফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত পহেলা জুন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের দেহে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর, তাকে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সময় তিনি শারীরিকভাবে অনেকটা দুর্বল ছিলেন।
৫ জুন নাসিমের পুত্র এবং সাবেক সাংসদ তানভীর শাকিল জয় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গতকাল রাত পর্যন্তও বাবার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। কিন্তু, আজ সকালেই হঠাৎ করে তার ব্রেইন হেমোরেজ (মস্তিকে রক্ষক্ষরণ) হলে তাক্ষণিকভাবে তার সার্জারি করা হয়।'
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্রেন সার্জারির টিমে নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রাজিউল হক ৬ জুন বলেন, 'মোহাম্মদ নাসিমের ব্লাড প্রেশার (বিপি) ওষুধ দিয়ে কন্ট্রোল করা গেছে, কিন্তু তার জ্ঞান একেবারে নেই। তার শরীরে লবণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।'
নাসিমের চিকিৎসায় নিউরোলজিস্ট, নিউরোসার্জারি স্পেসালিস্ট, নেফ্রোলজিস্ট, এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন স্পেশালিস্টদের নিয়ে ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
এছাড়া মোহাম্মদ নাসিম ডায়বেটিস, কিডনির সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন। আগেও একবার স্ট্রোক করেছিলেন তিনি।
তিন সন্তানের জনক মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে তিনি। সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও মোহাম্মদ নাসিম।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের মেয়াদে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।