টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: আসামীরা সবাই মহাসড়কে ডাকাতি করত
টাঙ্গাইলে ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা সকলেই ছিঁচকে ডাকাত ছিলো। তারা মহাসড়কে ডিম ও গ্যাস সিলিন্ডার বহনকৃত গাড়িসহ ছোট ছোট ডাকাতির কাজে জড়িত ছিলো। তবে ডিম ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলেও তারা বহনকৃত গাড়ি বিক্রি করতো না।
ঘটনার দিনও তারা এ ধরনের ছোট ডাকাতি করার জন্য বের হয়েছিলো। তাদের ডাকাতি এতো বড় মোড় নিবে সেদিন ডাকাতির আগে তারা নিজেরাও কল্পনাও করেনি। বিষয়টি পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। মামলার বাকি চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গত শনিবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। রাজা মিয়া ঈগল পরিবহনের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ উভয় অপরাধে অংশ নেন। অপর দুই আসামী মো. আওয়াল ও নুরনবী শুধু লুণ্ঠনে অংশ নেন। পরে তাদের তিনজনকেই কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে বাসটি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদি হয়ে বুধবার মধুপুর থানায় ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা করেন।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজা মিয়াকে (৩২) গত বৃহস্পতিবার ভোরে টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মো. আওয়াল (৩০) ও নুরনবীকে (২৬) শুক্রবার সকালে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। রাজা মিয়াকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে গোয়েন্দা পুলিশ। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, তারা ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার পুরো বিবরণ এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেছেন। তারা আদালতে জবানবন্দি দিতেও সম্মত হয়। পরে তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজা মিয়া ও নুরনবীর জবানবন্দি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল আলম লিপিবদ্ধ করেন। মো. আওয়ালের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমি খাতুন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, আসামী রাজা মিয়া ধর্ষণ এবং লুণ্ঠন উভয় অপরাধে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অপর দুইজন আওয়াল ও নুরনবী জবানবন্দিতে শুধু ডাকাতিতে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।