রেকর্ড পরিমাণে দাম বাড়ানোর পর জ্বালানি বিক্রি কমেছে ৩৪ শতাংশ
সম্প্রতি জ্বালানির দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ বাড়ানোর পর দেশে তরল জ্বালানির বিক্রি কমেছে ব্যাপক হারে।
আগস্টের ১ তারিখের তুলনায় ১০ তারিখ পর্যন্ত তরল জ্বালানির বিক্রি সর্বোচ্চ ৩৪.১ শতাংশ কমেছে।
৫ আগস্ট সরকার জ্বালানির দাম বাড়ানোর পর এখন গ্রাহকরা তরল জ্বালানির বদলে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) এবং অটো গ্যাস ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন।
ডিজেল এবং অকটেন থেকে সিএনজিতে পরিবর্তনের হার বাড়তে থাকায় সিএনজি এবং অটো ফিলিং স্টেশনগুলো ক্রমবর্ধমান যানবাহনের চাপের সম্মুখীন হচ্ছে।
সিএনজি ব্যবহার করা একটি গাড়ির সমান দূরত্ব অতিক্রম করতে ডিজেল, অকটেন এবং পেট্রোল চালিত গাড়ির বর্তমানে দেড়গুণ বেশি খরচ হয়।
বাস, পণ্য বোঝাই ট্রাক, ট্রেন এবং নৌপথে ব্যবহার করা ডিজেলের ব্যবহার কমেছে ১৬.০২ শতাংশ।
পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানুষ সিএনজির দিকে ঝুঁকে পড়ায় ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের চাহিদা কমছে।
অল ইন ওয়ান লিমিটেডের ব্যবস্থাপক কাজী রাজ কাদের। তেজগাঁওয়ে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং মহাখালীতে একটি পেট্রোল পাম্প রয়েছে তার। তিনি বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনালের ঠিক সামনে থাকা সত্ত্বেও তাদের পাম্পে ডিজেল বিক্রি প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে।
তিনি বলেন, "জ্বালানির দাম সমন্বয়ের পর থেকে আমরা আমাদের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে ব্যাপক চাপ দেখতে পাচ্ছি। ডিজেলে চলিত গাড়ি ও মাইক্রোবাস এখন সিএনজি ব্যবহার করছে।"
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের তথ্য অনুসারে, আগস্টের প্রথম দিনে মোট ডিজেল বিক্রি হয়েছিল ১৮,৮৩৭ টন, যা ১০ আগস্টে ১৫,৮১৯ টনে নেমে এসেছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের বিক্রি রেকর্ড ৩৪.১ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি মোটরসাইকেল এবং গাড়িতে ব্যবহৃত পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে বিক্রি কমেছে ২৬.৪৯ শতাংশ।
১ আগস্ট ফার্নেস অয়েলের বিক্রি ছিল ৪,১০৯ টন, যা ২,৭০৮ টনে নেমে এসেছে। একইসময়ে পেট্রলের বিক্রি ১,৮৪৬ টন থেকে নেমে এসেছে ১,৩৫৭ টনে।
অকটেনের বিক্রিও এই সময়ের মধ্যে ১০.৭৯ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নুর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "তেলের দাম বৃদ্ধির আগে ডুয়াল-ফুয়েলের যানবাহন জ্বালানি হিসেবে ৬০ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করতো।"
"কিন্তু এখন তারা যানবাহন চালানোর জন্য প্রায় ৭৫ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করছে। বাকি জ্বালানির জন্য তাদেরকে তরল জ্বালানির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। দেশের সবখানে গ্যাস সহজলভ্য না হওয়ায় এভাবে চলতে হচ্ছে তাদেরকে।"
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) নুমান আহমেদ তাফাদার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, দাম সমন্বয় আদেশের পরপরই জ্বালানির চাহিদা কমে যায়।
"তেলের ব্যবহার কিছুটা কমলেও আবারো আগের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।