চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার দেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রায় ১৫০ বছর ধরে ভূমিহীন অবস্থায় থাকা চা শ্রমিকদের ভূমির অধিকার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার দুপুরে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন আশ্বাস দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু চা শ্রমিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছেন, নাগরিকত্ব দিয়েছেন, আর তারা ভূমিহীন থাকবে, এটা হতে পারে না। আমি অবশ্যই তাদের ভূমির অধিকার প্রদান করব।
তিনি বলেন, 'চা শ্রমিকরা যাতে প্রত্যেকে ঘর পায়, বিশেষত মাটির অধিকার যেনো তারা পায় সেটার ব্যবস্থা আমি অবশ্যই করে যাব। কারণ ভূমির অধিকার না থাকলে একজন মানুষের সম্মান থাকে না।'
শনিবার বিকেলে ভার্চুয়ালি এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে চা শ্রমিকরা অংশ নেন।
সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমরা কাজ করে যাচ্ছি; বাংলাদেশে একজনও ভূমিহীন থাকবে না। আমরা ভূমিহীনদের জন্য ঘর করে দিচ্ছি। চা শ্রমিকরাও ভূমিহীন থাকবে না।'
চা শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, চা বাগানে স্কুল আছে। এই স্কুলগুলো যাতে জাতীয়করণ করা হয় এই ব্যাপারে আমি উদ্যোগ নেব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, চা বাগানের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেক বাগানে অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক্তার রাখতে হবে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে বাগানের পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদোগ নেওয়া হবে।
নারী চা শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করার দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, 'এটা খুবই ন্যায্য দাবি। কারণ তারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন। তাই তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস যাতে করা হয়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।'
তিনি বলেন, 'যারা শ্রম দেয়, কষ্ট করে, তাদের দিকে তাকানো আমাদের অবশ্যই দরকার।'
চা শ্রমিকদের উপহার দেওয়া সোনার বালা হাতে দিয়েই তাদের সাথে এই মতবিনিময় সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মতবিনিময় সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা গণভবনে এসেছিলেন আমার জন্য উপহার নিয়ে। আমার জীবনে এত দামি উপহার, এত সম্মান আর কখনও পাই নি। আপনারা এক টাকা দুই টাকা করে জমিয়ে এটা দিয়েছেন। এটা আমার জীবনের এক পরম উপহার।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আপনাদের দেয়া উপহার আজকেও আমি হাতে পরে আছি।'
এ সময় নিজের হাতের বালা শ্রমিকদের দেখান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, 'চা শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্র ভিন্ন। তাদের সমস্যাগুলো ভিন্ন। আমরা সরকারে আসার পর তাদের সমস্যা সমাধান করতে উদ্যোগী হই।
'আজকে আপনারা এদেশের নাগরিক। বঙ্গবন্ধুর কল্যাণে চা শ্রমিকরা অধিকার ফিরে পায়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনাদের প্রতি আমার একটা বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করি।'
দেশের চা বাগান বেষ্টিত ৪ জেলা থেকে ৮ জন শ্রমিক এই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। বক্তব্যে নিজেদের অভাব ও দাবির কথা জানান তারা।