কক্সবাজারে বিপন্ন প্রজাতির ২ ভালুক শাবক উদ্ধার
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি করে রাখা বিপন্ন প্রজাতির দুটি ভালুক শাবক উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ সময় আন্তর্জাতিক পাচারকারি চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে তারা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দীপক দাস (৩২) চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকার মৃত সোনারাম দাসের ছেলে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টায় চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
পুলিশ জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যপ্রাণী পাচারকারিদের আটকের তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া ভালুক শাবক দুটির বয়স আনুমানিক দুই মাস এবং প্রতিটির ওজন এক কেজির বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি মাহফুজুল বলেন, "চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকার বাসিন্দা দীপক দাসের বিরুদ্ধে আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী পাচারকাজে থাকার ব্যাপারে পুলিশের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল। এতে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তার উপর নজরদারি শুরু করে।"
"এক পর্যায়ে পুলিশ তথ্য পায় দীপক দাস সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে বান্দরবান সীমান্তের চোরাইপথে দুটি ভালুক শাবক পাচার করে এনে নিজ হেফাজতে রেখেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে চকরিয়া পৌরসভার দিগর পানখালী এলাকায় পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়।"
তিনি জানান, সন্দেহজনক বাড়িটি ঘেরাও করলে এক ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে তল্লাশী চালিয়ে বিপন্ন প্রজাতির দুইটি ভাল্লুক শাবক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, "গ্রেপ্তার দীপক দাস একজন আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচারকারি চক্রের সক্রিয় সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বন্যপ্রাণী পাচরকাজে জড়িত। মূলত প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে বান্দরবান সীমান্তের চোরাইপথে আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী পাচার করে এনে নিজ হেফাজতে রাখতো। পরে কিছুদিন রাখার পর অধিক মুনাফায় পাচার চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করতো।"
গ্রেপ্তার দীপকের দেওয়া তথ্য মতে, সক্রিয় পাচার চক্রের সদস্যরা বাণিজ্য নিষিদ্ধ বন্যপ্রাণী সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে থাকে।
"উদ্ধার করা ভালুক শাবক দুটি গত ১৪ দিন আগে তিনি মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে পাচার করে এনে নিজ বাড়িতে হেফাজতে রাখেন," বলেন পুলিশ সুপার।
সাম্প্রতিক সময়ে দীপক দাস সংশ্লিষ্ট পাচার চক্রের সদস্যরা দুটি ভালুক, দুটি উল্লুক ও ছয়টি লজ্জাবতী বানর সীমান্তের চোরাইপথে ভারতে পাচার করেছেন বলে তথ্য পাওয়ার গেছে, জানিয়েছেন মাহফুজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, আইইউসিএন বনায়ন ধ্বংস এবং বন্যপশু শিকারের কারণে ভালুকদের সংকটাপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশে কালো ভালুক মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত এবং বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ( সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা ) আইন ২০১২ এর তফসিল-১ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।