৪ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে...
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ছোট কুমিরা এলাকায় ইউনিটেক্স গ্রুপের তুলার গুদামে লাগা আগুন ৪ ঘন্টার বেশি সময় পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনের লেলিহান শিখা নিয়ন্ত্রণে সীতাকুণ্ড, কুমিরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট চেষ্টা করছে।
এরই মধ্যে, আশেপাশের বেশ কয়েকটি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ঝুঁকিতে পড়েছে আমদানি-রপ্তানি পণ্য মজুদ থাকা পাশের নেমসন কন্টেইনার ডিপো। আগুন যাতে আরো ছড়াতে না পারে সেই চেষ্টাই করছেন দমকল কর্মীরা।
এদিকে তুলার গুদামে লাগা আগুনের উত্তাপ আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় অনুভব করা যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই নিরাপদে স্থানে সরতে শুরু করেছেন। আগুনের উত্তাপে এলাকায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন টিবিএসকে বলে, গুদামটিতে ওয়েল্ডিং করার সময় ফুলকি থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা দিচ্ছে।
জানা যায়, ছোট কুমিরার ১ একর ৯৪ শতক জায়গায় অবস্থিত গুদামটির মালিক সীতাকুণ্ডের এস এল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের স্বত্বাধিকারী লোকমান হোসেন। কয়েক বছর আগে তিনি গুদামটি ইউনিটেক্স গ্রুপকে ভাড়ায় দেন। এরপর থেকে ইউনিটেক্স গ্রুপ তাদের স্পিনিং মিলের তুলার জন্য গোডাউনটি ব্যবহার করে আসছে। প্রতিদিন ট্রাক যোগে টনে টনে তুলা সেখানে স্তূপ করা হতো।
শনিবার (১১ মার্চ) সকাল ১০:২৫ দশটায় গুদামটিতে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। এসময় মুহুর্তেই তা পুরো গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হলে, আগুনের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে তারা সীতাকুণ্ড ও আগ্রাবাদকে স্টেশনকেও খবর দেন।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল টিবিএসকে বলেন, 'মাঝখানে আমরা পানি সংকটে পড়েছিলাম৷ ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। পরে পাশের নেমসন ডিপোর পানির ট্যাংক থেকে আমরা পাইপ সংযোগের মাধ্যমে পানি নেই। একইসাথে গ্রামের দু'টি পুকুরেও পাইপ লাগানো হয়৷ বর্তমানে এ দুটি উৎস থেকে আগুন নেভাতে পানির যোগান দেয়া হচ্ছে, যা দিয়ে আরও দুই ঘন্টা কাজ করা যাবে বলে আশা করছি। আগুন যাতে আশেপাশে ছড়াতে না পারে সে জন্য চারদিক থেকে পানি ছিটিয়ে আগুনের শিখাকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছি আমরা। তবে ঠিক কতক্ষণে নিয়ন্ত্রণে আসবে তা এই মুহূর্তেই বলা সম্ভব না'।
জানতে চাইলে ইউনিটেক্স গ্রুপের পরিচালক (সম্পত্তি) ফারহান আহমেদ টিবিএসকে বলেন, 'এখনই কিছু বলতে পারছি না। একটু পরে আমরা মিডিয়ায় ব্রিফ করব। আশা করি, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন'।
এর আগে গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকা সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভায়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অন্তত ৩০ জন।