ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ করলো মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ
উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রো রেল এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্প বাস্তবায়নে নেয়া ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। প্রথম কিস্তি হিসেবে সংস্থাটি ৫৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী ও ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের কাছে কিস্তির টাকার রেপ্লিকা চেক হস্তান্তর করেন। তবে জানা গেছে, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যে টাকা সরকারকে দিয়েছে সেটি তাদের আয় করা টাকা নয়। ঋণের টাকা থেকেই কিস্তির টাকা দিয়েছে সংস্থাটি।
চেক হস্তান্তরের পর ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিকের কাছে জানতে যাওয়া হয়, 'মেট্রোরেলের আয় থেকে এই কিস্তি পরিশোধ করা হলো কি-না'। উত্তরে তিনি বলেন, 'আয় ছাড়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের অর্থের আর কী উৎস থাকতে পারে।'
২০১২ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা থেকে এ প্রকল্পের প্রথম ঋণ নেওয়া হয় ২০১৩ সালে। মূলত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ ঋণ নেওয়া হয়। ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডের পর ৩০ বছরে পরিশোধের শর্তে এ ঋণ নেয় সরকার। যদিও এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুনে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকা থেকে কয়েক ধাপে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। আর বাকি ১৩ হাজার ৭৫৪ কোটি সরকারের অনুদান।
জাইকা থেকে নেওয়া প্রথম ঋণের কিস্তি দেওয়ার সময় হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আয় করতে না পারলেও প্রকল্পের টাকা থেকেই প্রথম কিস্তি দিলো। জানা গেছে, প্রথম কিস্তি বাবদ মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের প্রায় ৭০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দেওয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬০ টাকা দিয়েছে।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মানুষের চলাচলের জন্য মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনটি চালু করা হয়। এ লাইনের আওতায় রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত সপ্তাহে ৬ দিন চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেল থেকে যে আয় হচ্ছে তা দিয়ে নিয়মিত খরচ এখনও উঠছে না। এমনকি বিদ্যুৎ বিলও উঠছে না। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ আয় থেকে পুরো খরচ উঠে বাড়তি থাকবে, যা থেকে ঋণের কিস্তিও পরিশোধ সম্ভব হবে।