পানগাঁও এক্সপ্রেস: উদ্ধার কার্যক্রম শুরু, ১১ দিনেও পরিদর্শনে যায়নি তদন্ত কমিটি
দুর্ঘটনার দশদিন পর কন্টেইনারবাহী জাহাজ এমভি পানগাঁও এক্সপ্রেসের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জাহাজ এবং এতে থাকা কন্টেইনার উদ্ধারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশীয় জাহাজ উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান পিএস স্যালভেজকে।
পানগাঁও এক্সপ্রেসের পরিচালনাকারী সংস্থা সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সিস জাহাজটি উদ্ধারে পিএস স্যালভেজকে গত ১৬ জুলাই ওয়ার্ক অর্ডার দেয়। এরপর ১৭ জুলাই থেকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৯৬টি কন্টেইনার নিয়ে কেরানীগঞ্জের পাঁনগাও ইনল্যান্ড কন্টেইনার টার্মিনালে যাওয়ার পথে ভাসনচরের কাছে গত ৬ জুলাই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জাহাজটি। পড়ে যায় ৩ টি কন্টেইনার। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এতদিন সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনো দুর্ঘটনাকবলিত স্থান পরিদর্শন করেনি তদন্ত কমিটি।
দুর্ঘটনার দিন ৬ জুলাই নৌ বাণিজ্য দপ্তর দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে । নৌ বাণিজ্য দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলামকে কমিটির প্রধান এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারি হার্বার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোঃ মুস্তাহিদুল ইসলামকে সদস্য করা হয়।
দুর্ঘটনার কারন, আর্থিক ও পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ, দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ সহ ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দুর্ঘটনার পর দুই দিন সাপ্তহিক ছুটি বাদে ৭ কর্মদিবস পার হলেও তদন্ত কমিটি এখনো দুর্ঘটনাকবলিত স্থান পরিদর্শন করেনি। কত দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
তদন্ত কমিটির প্রধান রফিকুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস সাপোর্ট না থাকায় দুর্ঘটনাকবলিত স্থান পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। জাহাজে থাকা পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি জানতে কাস্টমসসহ বিভিন্ন সংস্থায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনো উত্তর পাওয়া যায়নি। কত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো তা এখনো সঠিক বলা যাচ্ছে না।
সি গ্লোরির ম্যানেজার মাইনুল হোসেন টিবিএসকে বলেন, পিএস স্যালভেজ কোম্পানিকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার পর উদ্ধার কার্যক্রমের সার্বিক বিষয় নিয়ে ১৭ জুলাই সকালে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর উদ্ধার কার্যক্রমের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে পিএস স্যালভেজ। প্রতিষ্ঠানটি ওই রুটে চলাচলকারী দুর্ঘটনা কবলিত ১৭ টি লাইটার জাহাজ উদ্ধার করেছে। আমরা আশাবাদী খুব শীঘ্রই উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হবে।
তিনি আরো বলেন, শুরুতে জাহাজে থাকা কন্টেইনার উদ্ধার করা হবে। এরপর উদ্ধার করা হবে জাহাজ। উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পরিবহনে প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ টাগবোট দিয়ে সহযোগিতা করবে।
সি গ্লোরির তথ্য মতে, দুর্ঘটনার পর একাধিক উদ্ধারকারী সংস্থা দুর্ঘটনাকবলিত স্থান পরিদর্শন করে। সবশেষ পিএস স্যালভেজের সাথে চুক্তি করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী জাহাজ উদ্ধারের জন্য ৩ কোটি টাকা নেবে পিএস স্যালভেজ। আর পুরো উদ্ধার কার্যক্রমে মোট চার কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে সি গ্লোরি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো: ওমর ফারুক টিবিএসকে বলেন, জাহাজ উদ্ধারে পিএস স্যালভেজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১৫০ টনের ক্রেন, বার্জ সহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান।
পিএস সেলভজের ম্যানেজিং পার্টনার আশরাফ উল আলম মাসুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উদ্ধার অভিযান নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর এ বিষয়ে আপডেট জানানোর কথা বলেন তিনি।