কোনো সংকটজনক পরিস্থিতিতে না যাওয়াই বাঞ্ছনীয়: ১৩ রাষ্ট্রদূতকে ডাকা প্রসঙ্গে এম. হুমায়ুন কবির
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা নিয়ে বিবৃতির ঘটনায় ১৩ বিদেশি মিশনের প্রধানকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বুধবার (২৬ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, এর প্রেক্ষিতে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের গণমাধ্যমে দেওয়া যৌথবিবৃতি কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করেছে।
'তাদের (যৌথ মিশনসমূহের) কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণে আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি,' বলেন শাহরিয়ার আলম।
এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর কাছে তার পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন।
'গত কিছুদিন আগে প্রায় একই ধরনের ঘটনায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছিল। জাতিসংঘের যিনি মুখপাত্র, তিনি কিন্তু ঢাকায় আবাসিক প্রতিনিধির অবস্থানকে সমর্থন করেছেন,' বলেন হুমায়ুন কবির।
'তার অর্থ, আমরা যে কথাটা বলতে চাচ্ছি তার বিপরীতে তাদের অবস্থানটা শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে তা যদি একটি দৃষ্টান্ত হয়, তাহলে বলা যায় যে বিষয়টি কেবল যেসব মিশন কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে, তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করার কারণ নেই। এটি তাদের রাজধানী পর্যন্ত যাবে।'
আর এমনটা হলে এ নিয়ে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে মন্তব্য করেন হুমায়ুন কবির।
এ ধরনের বিষয়ে বাংলাদেশ সংকটজনক জায়গায় যেতে চায় কি না তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ রয়েছে উল্লেখ করে সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, 'কোনো সংকটজনক পরিস্থিতিতে না যাওয়াই বাঞ্ছনীয় হবে বলে আমি মনে করি।'
দুটি কারণে বাংলাদেশকে কিছুটা সতর্ক থাকা ও ধৈর্য বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এম. হুমায়ুন কবির। 'প্রথমত বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে আমাদের অর্থনৈতিক অসুবিধা আছে। আর সামনে একটা নির্বাচনও রয়েছে,' বলেন তিনি।
তারা (বিদেশি রাষ্ট্রগুলো) আমাদের অংশীদার এবং আগামী দিনেও তা-ই থাকবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'এর সুবিধা ও দায়বদ্ধতা দুটিই আছে। আমরা শুধু সুবিধা নেব, দায়বদ্ধতা গ্রহণ করব না, তা হয় না।'
'আমরা যদি মনি করি যে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক প্লাস-মাইনাস হলে কোনো অসুবিধা হবে না, তখন আমরা সিদ্ধান্ত আমাদের মতো নিতে পারি। আর যদি আমরা তাদের কথাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি, তাহলে সেই আলোকে আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে,' বলেন এম. হুমায়ুন কবির।
আর সেভাবে চিন্তাভাবনা করাটাই উভয়পক্ষের পারস্পরিক সুবিধার সাপেক্ষে উত্তম হবে বলে মনে করেন তিনি।