বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আরো বাড়ার আশঙ্কা
সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে আরও ১৪ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে এবং ২৭৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ডেঙ্গু রোগী আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা কীটতত্ববিদের।
বৃষ্টির কারণে ছাদে, ড্রেনে, দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে পরে থাকা পলিথিন, কনটেইনারে মশার ব্রিডিং আরো বাড়বে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সাবেক প্রধান কীটতত্ত্ববিদ খলিলুর রহমান।
তিনি টিবিএসকে বলেন, "এতদিন মশার ইন হাউস ব্রিডিং সোর্স ছিলো। এখন বৃষ্টির কারণে ছাদ, ড্রেনে জমে থাকা কনটেইনার, ময়লা রাখার বিভিন্ন পাত্র, পলিথিন, দুই বিল্ডিংয়ের মাঝখানে ব্রিডিং সোর্স তৈরি হবে। মশার ঘণত্ব বাড়লে রোগীর সংখ্যা বাড়বে।"
আরো এক মাস দৈনিক প্রায় ৩ হাজারের কাছাকাছি সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত মোট ৩২৭ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছে এবং এ বছর ৬৯,৪৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নতুন রোগীদের মধ্যে ১,১১৯ জন সনাক্ত করা হয়েছে ঢাকা থেকে; বাকি ১৬৩২ জন দেশের অন্যান্য প্রান্তের।
ঢাকায় ৪,৬৫২ জন এবং দেশের অন্যান্য স্থানে ৪,৯২০ জনসহ বর্তমানে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯,৫৭২ জন ডেঙ্গু রোগী।
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বাড়ার পিছনে এডিস অ্যালবোপিকটাস দায়ী বলে মনে করেন খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, "শুধু এডিস অ্যাজিপ্টি দিয়ে ঢাকার বাইরে কেস বাড়ছেনা। আমার ধারণা এটি অ্যালবোপিকটাস দিয়ে হচ্ছে। যশোর, বরিশাল, সাতক্ষীরায় ডেঙ্গু কেস বাড়ছে, সেসব এলাকায় অ্যালবোপিকটাসের সংখ্যা বেশি।"
"অ্যালবোপিকটাস নিয়ে আমাদের গবেষণা করা উচিৎ। এ জাতের মশা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন," বলেন তিনি।
খলিলুর রহমান আরো বলেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের উচিত কমিউনিটিকে কাজে লাগিয়ে বাড়ি বাড়ি যেয়ে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পাশপাশি বড় ধরনের প্রজনন উৎসগুলোতে লার্ভিসাইট দিতে হবে।
মশা নিধন করতে না পারলে অক্টোবরের আগে ডেঙ্গু কমবেনা বলে জানান তিনি।
ডেঙ্গুর ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লেও এখনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, "ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এটি এখনো ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে, পরিপূর্ণভাবে ডেভেলপ হয়নি। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি।"
সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "যে সমস্ত দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোন টিকার অনুমোদন দেবে, আমরা সেই টিকা অবশ্যই আনার চেষ্টা করব। আমরা এখনো সে মানের কোনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন পাইনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত কোনো টিকার অনুমোদন দেয়নি।"