ড. ইউনূসকে ‘হয়রানি’র প্রতিবাদে ৩৪ নাগরিকের বিবৃতি
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ৩৪ নাগরিক। তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব পদক্ষেপ ও একতরফা বিষোদগার বন্ধে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, "সম্প্রতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমে তার কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আইন ভঙের অভিযোগে শ্রম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেওয়ানি চরিত্রের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলাটি দায়ের করা হয়। এই মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা বর্তমানে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠছে। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সকল পদক্ষেপ ও একতরফা বিষোদগার বন্ধের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।"
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। বিবৃতিদাতারা হলেন: শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক, মানবাধিকার কর্মী শারমীন মুরশিদ, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ড. আসিফ নজরুল, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক সি আর আবরার, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, নৃতাত্ত্বিক রেহনুমা আহমেদ সহ ৩৪ নাগরিক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "ইতিপূর্বে হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ড. ইউনূসকে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হয়রানি করেছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে নানাধরনের বিষোদগার অব্যাহত রয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করার যুক্তি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আমরা এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।"
বিবৃতিদাতারা বলেছেন, "প্রফেসর ড. ইউনূস অতিদরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে বিশ্বে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেসনাল গোল্ডমেডেল সহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মোড়কে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ তার কর্মযজ্ঞকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা প্রদান করছে।