চট্টগ্রামে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত কিশোর রাজনীতিতে জড়িত ছিল না, দাবি পরিবারের
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যে সংঘর্ষের সময় নিহত কিশোর জাহেদ হোসেন রুমন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
নিহতের চাচা ইউনুস নবী বলেন, রুমন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত না থাকলেও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তার। এটিই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
রুমনের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাত বছর আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর নানার বাড়িতেই বড় হয়েছে রুমান। সে ছিল ওসমানপুর স্কুলের ছাত্র। তবে সপ্তম শ্রেণির পর অভাব অনাটনের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে পারেনি রুমন। আজমপুর বাজারে নানার দোকানের পাশেই একটি পানির পাম্পহাউজে গত দুই বছর ধরে কাজ করছিল সে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে সেই পাম্প হাউজেই ছিল রুমন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিএনপি কর্মীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগ কর্মীরা তার পাম্পহাউজের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছিল রুমন। তা দেখে বিএনপি কর্মীরা ক্ষেপে গিয়ে কাঠের লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে পুকুরে পড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ ঘটনার আধা ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে রুমনের মামা ইউনুস নবী পুকুর থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রুমনের মা খালেদা আক্তার তার নিরপরাধ ছেলের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, "আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে অকারণে খালি না হয়।"
এদিকে, শুক্রবারের সংঘর্ষের পর থেকে আজমপুর বাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুরো এলাকায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা মহড়া দিচ্ছেন। প্রতিটি মোড়ে ছিল তাদের সতর্ক অবস্থান।
এ ঘটনায়, নিহত রুমনের মা খালেদা আক্তার বাদি হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৫ জন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জন আসামিকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।