মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন সমস্যা ক্রমেই জটিল হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার বলে দাবি করা দেশগুলো প্রায়ই তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিষয়ে 'নীরব থাকে বা অস্বীকার' করে যা, অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে আমরা সীমান্তে দেয়াল, জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন, সমুদ্রতীর এলাকায় বন্দিশালা, সমুদ্রে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ, নির্বিচারে অভিবাসন চর্চা, আন্তঃদেশীয় অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক ইত্যাদির অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য বাস্তবতা দেখেছি।'
আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) জন্য জাতীয় প্রস্তুতিমূলক পরামর্শের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুস সাত্তার এসোয়েভ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) ২০২২-২০২৩ সালের সভাপতি হিসেবে কাজ করা ফ্রান্স ২০২৪ সালের ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি জেনেভায় জিএফএমডির ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
এই শীর্ষ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'অভিবাসনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, যা অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক অগ্রাধিকারের মাধ্যমে ক্রস-কাটিং পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হবে।'
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আনন্দিত যে দুবাইয়ে আসন্ন কপ-২৮ এবং জেনেভায় জিএফএমডি শীর্ষ সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসনের বিষয়কে তাদের অভিন্ন অগ্রাধিকারের একটি হিসেবে গ্রহণ করেছে।'
বিশ্বব্যাংকের গ্রাউন্ডসওয়েল রিপোর্ট ২০২১ অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ১ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে পারে। এটি আরও ভবিষ্যৎদ্বাণী দেয় যে, জলবায়ু অভিবাসন অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের হারকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
শাহরিয়ার বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে আমাদের উপকূলীয় এলাকা ও অন্যান্য জলবায়ু (পরিবর্তন কবলিত) হটস্পট থেকে বড় শহরগুলোয় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে অভিবাসনের হার বাড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।'
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'জলবায়ুজনিত মানুষের গতিশীলতার বিষয়টি আগামী দিনগুলোতে নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের আরও ভালোভাবে উপলব্ধি ও মনোযোগের দাবি রাখে।'