মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষীসহ ৩৩০ জনকে ফেরত পাঠানো শুরু
আভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুলিশ কর্নেল মিও থুরা নউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট বিজিপি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিঘাটে আসেন। বেলা ১১ টায় বিজিবি প্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নিকট আশ্রয় গ্রহণকারীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
ভোরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যমছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত ও টেকনাফ থেকে বিজিবির কড়া পাহারায় কক্সবাজারের ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাটে আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে আসা হয়।
বাংলাদেশি জাহাজ কর্ণফুলী দুপুর ১২টা নাগাদ ১৬৫ জনকে নিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমান্তে অপেক্ষারত মিয়ানমারের নেভি শিপের উদ্দেশে রওনা হয়।
কর্ণফুলী ফিরে আসার পর আজ বাকিদেরও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে জানান বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার বিষয়ক পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরি, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাহিনীটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে সকালে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান নেয়। ইনানী জেটিঘাট থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওই জাহাজে নিয়ে গিয়ে হস্তান্তর করা হবে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। যুদ্ধের মধ্যে বিদ্রোহীরা বিজিপির কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করে নিলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে।
এসময় আশ্রয়প্রার্থীদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে রাখা হয় ঘুমধুমের একটি স্কুলে। পরে তাদের মধ্যে ১০০ জনকে সরিয়ে নেয়া হয় টেকনাফে।
এর মধ্যেই তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের তরফ থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেক্ষেত্রে দেশটি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়।
পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী ৩৩০ জনের মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চার জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুই জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চার জন বেসামরিক নাগরিক।