প্রায় সব কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ঈদ বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে: শিল্প পুলিশ
রোজার শুরুর দিকে পোশাক খাতের চার শতাধিক কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা হতে পারে – এমন আশঙ্কা থাকলেও শেষ দিকে এসে বড় ধরনের অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রাত পৌনে ৯টায় শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'প্রায় শতভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে।'
পোশাক শিল্প মালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিজিএমইএ)-এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, একটি কারখানা বাদে সব কারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পাওনা ইস্যুতে বড় ধরনের অসন্তোষের কথা তারা শোনেন নি। তবে অনেক কারখানায় বোনাসের দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মানেনি।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, 'কয়েকটি কারখানার অভ্যন্তরে ছোটখাট অসন্তোষ হলেও বড় ধরনের অসন্তোষ হয়নি।'
শিল্পাঞ্চল পুলিশের আওতাধীন ৯ হাজারের বেশি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে পোশাক কারখানা আড়াই হাজার।
অন্যদিকে বিজিএমইএ'র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'শতভাগ কারখানায় মার্চ মাসের বেতন এবং ঈদুল ফিতরের ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে। দুই-একটি কারখানার বেতন ভাতা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা আজকের মধ্যেই পরিশোধ হবে।'
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'ঈদের আগে বেতন-ভাতা বিষয়ে সমস্যা হতে পারে এরকম ৪৫০টি কারখানা প্রতিষ্ঠানকে ক্লোজ মনিটরিংয়ের আওতায় এনে বিজিএমইএ সমস্যার ধরন বুঝে সমাধানের উদ্যোগ নেয়।'
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'বিজিএমইএ'র সরাসরি হস্তক্ষেপে সমস্যাপূর্ণ প্রায় ২৬টি কারখানার শ্রমিকদের বেতনভাতাদি নিশ্চিত করা হয়েছে।'
সংগঠনটির নবনির্বাচিত সভাপতি এসএম মান্নান কচি টিবিএসকে বলেন, 'একটি কারখানায় সমস্যা ছিল। সেটি সমাধানের কাজ চলছে। এর বাইরে আর কোনো কারখানায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। সব কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে।'
মঙ্গলবার রাত ৮টায় বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি ও শ্রমিকনেত্রী তাসলিমা আখতার টিবিএসকে বলেন, 'সোমবার অন্তত দুটি কারখানায় অসন্তোষের খবর পেয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) অসন্তোষের খবর এখনও পাইনি।'
তিনি বলেন, 'যেসব কারখানায় কম শ্রমিক, সাব কন্ট্রাক্ট এ কাজ করে – এমন কারখানাগুলো নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বোনাস দিয়েছে।'
বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তাওহীদুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'আমরা মঙ্গলবার বড় ধরনের কোনো অসন্তোষের খবর পাইনি।'
তবে গত তিন সপ্তাহ ধরে বেতন-বোনাস ইস্যুতে ২০টির বেশি কারখানায় অসন্তোষ হয়েছিল বলে জানিয়েছিল শিল্প পুলিশ ও কলকারখানা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র।
এর মধ্যে কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামে একটি কারখানায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলায় দুই শ্রমিক আহত হন।
এছাড়া সাভারে পোশাক শ্রমিকদের একটি সংগঠন র্যালি করার সময় হামলায় আহত হন ২১ জন।