শুধু বাবা কেন সন্তানের অভিভাবক হবেন, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল জারি
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন-১৮৯০-এর ১৯ (খ) ধারা অনুসারে, বাবাই সন্তানের একমাত্র অভিভাবক হবেন—এ ধারাকে কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তার ব্যাখ্যা চেয়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে বাবার পাশাপাশি মাকে সন্তানের অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নির্দেশিকা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
চার মাসের মধ্যে (৪ আগস্ট) মধ্যে নির্দেশিকা আদালতে জমা দিতে হবে।
আদালত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশিকা তৈরির জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল ও নির্দেশনা দেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়; আইন কমিশন, বাংলাদেশ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশকে রুলের বিবাদী করা হয়েছে।
পাঁচটি অধিকার সংস্থা—থিঙ্ক লিগ্যাল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারীপক্ষ ও অ্যাকাডেমি অভ ল অ্যান্ড পলিসি (আলাপ)—জনস্বার্থে আবেদনটি করে।
পিটিশনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, 'আজকের এ আদেশটি পরিবারের অভ্যন্তরীণ এবং শিশুদের অভিভাবকত্ববিষয়ক অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীদের সমতা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এবং একইসাথে ঔপনিবেশিক কাল থেকে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইন, প্রচলিত সামাজিক ধ্যান-ধারণা দূর করে প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।'
পিটিশনের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিতা গাজী রহমান বলেন, 'অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন-১৮৯০ ১৩৪ বছরের পুরানো ঔপনিবেশিক আইন। এই আইন অনুসারে, মহিলাদের কোনো আইনি মর্যাদা বা তাদের সন্তানদের ওপর কোনো অধিকার ছিল না, যা একুশ শতকে প্রযোজ্য নয়। এ আদেশ সন্তানদের অভিভাবক হিসেবে মায়েদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দুর্দান্ত প্রথম পদক্ষেপ।'
পিটিশনকারীরা নারীর সমতা ও বৈষম্যহীনতার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন-১৮৯০-এর ১৯ (খ) ধারার বিরুদ্ধে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন।