বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার চাইলে ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে: দুদকের কমিশনার
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের ১৫ দিন সময় দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কমিশনার জহুরুল হক।
বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের তলব প্রসঙ্গে দুদকের কমিশনার সাংবাদিকদের বলেছেন, 'দুদক কাউকে নোটিশ করলে তিনি আসতে বাধ্য কি না না, সেটা আইনে সুস্পষ্ট বলা নেই। না আসলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তবে তার সুযোগ আছে সময় চাওয়ার। সময় চাইলে দুদক ১৫ দিন সময় দিতে পারবে। এই এখতিয়ার কমিশনারের রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'সময় দেওয়ার পরও যদি তিনি দুদকে না আসেন তাহলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তখন নথিপত্র দেখে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় প্রমাণিত হবে, না হলে নাই '
বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা দেশে রয়েছেন কি না -জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, 'দেশে আছে নাকি বিদেশে গেছে এ সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য তাদের কাছে জানা নেই। অনুসন্ধানের স্বার্থে যা যা করণীয় সবই করা হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার হবে, এতে কোনো বাধা নেই। এটা আদালত বুঝবেন।'
অন্যদিকে, বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে বিদেশে কোনো সম্পদ আছে কি–না, তার খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে দুদক।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বিদেশে সম্পদের খোঁজ নিতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) গত ২৮ মে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় বেনজীর পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়ার পর তিনি বিদেশেও অর্থপাচার করতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে দুবাই, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনো সম্পদ আছে কি–না, যদি থাকে সেসব তথ্যের নথিপত্র চেয়ে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বিএফআইইউকে চিঠি দিয়েছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।
বিএফআইইউয়ের মাধ্যমে ওইসব দেশের কাছ থেকে তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। দুদকের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, গতকাল দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান টিবিএসকে বলেছিলেন, বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তারা বিদেশে কোনো অর্থপাচার করেছে কি না, সে বিষয়েও অনুসন্ধান করছে দুদক।
তিনি বলেন, দুদক এ জন্য দুবাই, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধান করবে। যদি ওই দেশে তাদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়, সেগুলো ক্রোক ও জব্দের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে দুদক।
এছাড়াও বেনজীর আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হবে কি–না, তা তদন্ত কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, প্রয়োজন মনে করলে আদালতে বেনজীর আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাইবেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্তে যদি আরও অপরাধলব্ধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়, তাহলে সেগুলো জব্দে আদালতে আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।