ছুটি শেষে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে মানুষ, চাপ নেই সড়কে
ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। এরই মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরা ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। যদিও রাজধানীর রাস্তাঘাটে সেভাবে যানবাহনের চাপ দেখা যায়নি। আবার রাজধানীর রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও যেমন কম, তেমনি কম মানুষের চলাফেরাও।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন জয়নাল আবেদীন। বুধবার সকালে বাসে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় ফিরেছেন তিনি। টিবিএসকে বলেন, "অফিসের জন্য ঢাকায় চলে এসছি। যদিও পরিবারের কাউকে আনিনি। বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ। (বৃহস্পতিবার) অফিস করে আবার শনিবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসবো। পথে কোনো যানজট ছিল না। বাসে মানুষও ছিল কম।"
মো. রেজাউল করিম বগুড়া থেকে গতকাল ঢাকা এসেছেন। রাস্তায় যানজট না থাকায় তিনি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত দুই ঘণ্টা আগে পৌঁছেছেন। টিবিএসকে তিনি বলেন, "বগুড়া থেকে আসতে সাধারণত ৫-৬ ঘণ্টা লাগে। আবার যানজট থাকলেতো আরও বেশি সময় লাগে। তবে আমি চার ঘণ্টায় পেঁছেছি। রাস্তা ফাঁকা ছিল। মানুষের চাপ শুক্র-শনিবারে বেশি থাকতে পারে।"
মূলত ঈদ উপলক্ষে ১৬ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত তিন দিন ছিল সরকারি ছুটি। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এ কারণে এবারের ঈদের ছুটি পড়েছে মোট ৫ দিন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকেই ১৯ ও ২০ জুন অর্থাৎ বুধ ও বৃহস্পতিবার বাড়তি ছুটি নিয়ে বাড়িতে পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছেন। এর পাশাপাশি শুক্র ও শনিবার ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারা। এ কারণে রাস্তাঘাটে ঢাকা ফেরত মানুষের বড় ধরনের চাপ এখনও তৈরি হয়নি।
এদিকে, গতকাল কমলাপুর স্টেশনেও ছিল যাত্রীদের ভিড়। অনেকে ঢাকা ছাড়ছেন, আবার কেউ কেউ বাড়ি থেকে ঢাকা ফিরছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন টিবিএসকে বলেন, "এখনও মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। আবার মঙ্গলবার থেকেই মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। তবে যাত্রীদের চাপ নেই।"
তিনি বলেন, "অফিসগামী কিছু মানুষ আসছেন। সামনে শুক্র ও শনিবার আছে। তখন ঢাকামুখী মানুষের চাপ বাড়বে। অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই ট্রেন চলছে। বড় ধরনের কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি।"
এছাড়া, সদরঘাট টার্মিনালেও গতকাল বরিশাল, ভোলা, চরফ্যাশন, ভান্ডারিয়া, লালমোহনসহ দেশের বিভিন্ন রুটের যাত্রীতে পূর্ণ ছিল লঞ্চ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনালে বাড়তে থাকে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড়
ভোলা থেকে সোমবার রাতে রওনা দিয়ে মঙ্গলবার অফিস করার উদ্দেশ্যে ঢাকা আসেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, "পর্যাপ্ত লঞ্চ থাকায় ঢাকাগামী মানুষের অতিরিক্ত ভিড় নেই। তবে লঞ্চগুলো সব পরিপূর্ণ ছিল। আসতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। ভাড়াও স্বাভাবিক ছিল।"
এদিকে মন্ত্রণালয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, "যদিও সড়কে ঈদযাত্রা তুলনামূলকভাবে মসৃণ ছিল, তবে ফিরতি যাত্রা উদ্বেগের বিষয়। কারণ ফিরতি যাত্রায় প্রায়ই কম মনোযোগ দেওয়া হয়, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই, আমাদের অবশ্যই ফিরতি যাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।"
সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখলে দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।