পেঁয়াজের ট্রাক লুট: ২ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জনের ২১ বছরের কারাদণ্ড
সিরাজগঞ্জে পেঁয়াজের ট্রাক লুট, চালক ও হেলপারকে অপহরণ ও চাঁদা দাবির মামলায় পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া লুট হওয়া পেঁয়াজ কেনার দায়ে আড়তদারকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম আলী আহামেদ এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আড়তদার ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি পলাতক ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক উপ-পরিদর্শক মাইনুল হাসান, সলঙ্গা থানার সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মতিউর রহমান খান, সলঙ্গা থানার পাটধারী গ্রামের শীতল প্রামাণিকের ছেলে রেজাউল করিম রনি, একই থানার হাসানপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে সবুজ আলী ও বাগুন্দা গ্রামের বাহাজ উদ্দিনের ছেলে আনিস ওরফে আনিস ড্রাইভার এবং সদর উপজেলার কান্দাপাড়ার নান্নু মন্ডলের ছেলে আড়তদার সাব্বির আলম সবুজ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিত সাহা জানান, পুলিশ কর্মকর্তা মাইনুল হাসান, মতিউর রহমান, রেজাউল করিম রনি, সবুজ আলী ও আনিস ড্রাইভারকে পেনাল কোডের ৩৬৫ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পেনাল কোডের ৩৯২ ধারায় একই আসামিদের ১৪ বছর কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আড়তদার সাব্বির আলম সবুজকে পেনাল কোডের ৪১১ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই রাতে ২৫২ বস্তা ভারতীয় পেঁয়াজ বোঝাই একটি ট্রাক চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ বন্দর থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। ট্রাকটি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার র্যাব ১২ এর কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে পুলিশ পরিচয়ে চালক ও হেলপারকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করা হয়। পরে চালক ও হেলপারকে আটক রেখে ট্রাকের মালিকের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় ট্রাকের মালিক রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মজিবুর রহমান সলঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে কাজীপুর নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মাইনুল হাসান, সলঙ্গা থানার এএসআই মতিউর রহমান খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলা চলাকালে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি আব্দুর রহমান। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস, ইন্দ্রজিত সাহা, আসিফ আজাদ, জামাল উদ্দিন ও কামরুল হুদা।