জেনে নিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের পরিচয়
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে তৈরি করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মোট ১৪ জন উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গভবনে তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এর আগে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে মোট ১৭ জন উপদেষ্টার নামের তালিকা পাঠানো হয়।
বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা ও ফারুক-ই-আজম ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় শপথ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
ইউনূস বাদে বাকি ১৬ জন উপদেষ্টার সংক্ষিপ্ত পরিচয় পাঠকদের জন্য তুলে ধার হলো।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২০০৫ সালের ২ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগদান করেন এবং ৩০ এপ্রিল ২০০৯-এ তার চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সালেহ উদ্দিন বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের শীর্ষ অর্থ সংস্থা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
সালেহ উদ্দিন আহমেদ ১৯৭৮ সালে কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা বিভাগে স্বল্প মেয়াদে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
তিনি বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড) কুমিল্লার মহাপরিচালক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
পরবর্তীকালে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
আসিফ নজরুলের জন্ম ১৯৬৬ সালের ১২ জানুয়ারি। টিভি টক-শো ও তার কলামে সাহসী রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য তিনি বিশেষভাবে খ্যাত। তিনি দশের অধিক গ্রন্থের রচয়িতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পূর্বে ১৯৯১ সালে আসিফ নজরুল সাপ্তাহিক পত্রিকা বিচিত্রায় কাজ করতেন।
আদিলুর রহমান খান, সম্পাদক, অধিকার
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আদিলুর রহমান খান মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'-এর সম্পাদক। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারেও একই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি পদত্যাগ করেন।
২০১৩ সালে হেফাজত-ই-ইসলামের আন্দোলন দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে অধিকার-এর প্রতিবেদন 'ভুল' উল্লেখ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে (আইসিটি) তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সে মামলায় সাজা হওয়ার পর গতবছর জামিন পান তিনি। আদিলুর রহমান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশকর্মী
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর প্রধান নির্বাহী। পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন সময় সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন মামলা করে আলোচিত হন তিনি।
বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের 'পরিবেশ পুরস্কার' এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে 'গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ' পেয়েছেন তিনি। ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকীর 'হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট' খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশি আইনজীবী তিনি। এছাড়া তিনি ২০১২ সালে রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান।
১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করা রিজওয়ানা হাসান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন। পরে বিভাগ পরিবর্তন করে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
নূরজাহান বেগম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গ্রামীণ শিক্ষা
বাংলাদেশ ব্যাংক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দিলে নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান 'গ্রামীণ শিক্ষা'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০১০ সালে গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন-এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন তিনি।
১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় তিনি প্রফেসর ইউনূসের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। ওই সময় নূরজাহান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূল গ্রুপগুলোতে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, ইউএসএ-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিভিন্ন খেতাবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
নাহিদ ইসলাম, শিক্ষার্থী, সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর ছাত্র। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশক্তির সাধারণ সম্পাদকও তিনি।
২৬ বছর বয়সি নাহিদের জন্ম ১৯৯৮ সালে। তিনি ঢাকা সরকারি বিজ্ঞান কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা একজন শিক্ষক এবং মা একজন গৃহিণী। নাহিদ বিবাহিত এবং তার একজন ছোট ভাই আছে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, শিক্ষার্থী, সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
কুমিল্লার মুরাদনগরের আসিফ মাহমুদ (২৬) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর ছাত্র। আসিফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক।
তিনি নাখালপাড়া হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর ২০১৭ সালে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি কলেজের বিএনসিসি প্লাটুনের একজন প্রাক্তন ক্যাডেট সার্জেন্ট ছিলেন।
তিনি ঢাবির ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতিও ছিলেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশের একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার। তিনি ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক হন। তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমি, কাকুল থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭২ সালে দেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
ফরিদা আখতার, মানবাধিকারকর্মী
ফরিদা আখতার একাধারে লেখক, গবেষক ও আন্দোলনকর্মী। তার জন্ম চট্টগ্রাম চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান দিক। এছাড়া নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন তিনি।
তিনি বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
বর্তমানে তিনি উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা)-এর নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে 'নারী ও গাছ, 'কৈজুরী গ্রামের নারী' ও 'গাছের কথা'।
সুপ্রদীপ চাকমা, চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড
খাগড়াছড়ির সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান।
সুপ্রদীপ এর আগে ভিয়েতনাম ও মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন এবং সরকারের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচের একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার হিসেবে তিনি রাবাতে বাংলাদেশ দূতাবাস, কলম্বোতে বাংলাদেশ হাইকমিশন, ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
এএফ হাসান আরিফ, আইনজীবী
এএফ হাসান আরিফ সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে আইনচর্চা করছেন। ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তিনি এএফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের চেম্বার প্রধান।
হাসান আরিফ ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি আইসিসি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আরবিট্রেশনের কোর্ট মেম্বার।
মো. তৌহিদ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব
মো. তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। তিনি ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন।
তৌহিদ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার ছিলেন। ২০০৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তৌহিদ ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের জুনে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
বিধান রঞ্জন রায়, মনোবিদ
বিধান রঞ্জন রায় ময়মনসিংহের একজন মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের পরিচালক-কাম-অধ্যাপক ছিলেন।
বিধান সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ছিলেন
আ ফ ম খালিদ হোসেন, ইসলামী শিক্ষাবিদ
আ ফ ম খালিদ হোসেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরানিক সায়েন্সেস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।
১৯৭১ সালে সাতকানিয়া আলিয়া মাহমুদুল উলুম মাদ্রাসা থেকে প্রথম বিভাগে আলিম ও ১৯৭৩ সালে ফাযিল পাশ করেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে কামিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৩ সালে একই বিষয়ে এমএ পাশ করেন।
খালিদ হোসেন ১৯৮৭ সালে সাতকানিয়া আলিয়া মাহমুদুল উলুম ফাযিল মাদ্রাসায় আরবি ভাষা ও সাহিত্যের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর এবং ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা নির্বাচিত হন।
শারমিন মুরশিদ, মানবাধিকারকর্মী
বেসরকারি সংস্থা এবং স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপ 'ব্রতী'-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সরব রয়েছেন।
ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযোদ্ধা
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌকমান্ডো ফারুক-ই-আজম একজন বীর প্রতীক। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য গঠিত 'অপারেশন জ্যাকপট'-এর অভিযানদলের উপ-অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। ওই সময় তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দেন এবং পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য মনোনীত হন।