দেশজুড়ে অন্তত ৫৩৮ থানার কার্যক্রম পুনরায় শুরু
দেশজুড়ে মোট ৬৩৯টি থানার মধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫৩৮টি (৮৪ শতাংশ) থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে যোগদান করছেন কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, "আইজিপির (পুলিশ মহাপরিদর্শক) নির্দেশনার পর গতকাল পর্যন্ত ডিএমপি সদর দপ্তরে ৬০ শতাংশ পুলিশ সদস্য কাজে ফিরেছেন। আজ নাগাদ ৭০ ভাগ বা তারও ওপরে কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।"
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, বিভিন্ন মহানগর পুলিশের ১১০টি থানার মধ্যে ৮৪টি এবং জেলার ৫২৯টি থানার মধ্যে ৪৫৪টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার সব পুলিশ সদস্যকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।
এদিকে, চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি থানায় হামলার ঘটনায় তিন দিন বন্ধ থাকার পর (১০ আগস্ট) থেকে নগরীর থানাগুলো পুনরায় খুলতে শুরু করে। সীমিত আকারে শুরু হয় কার্যক্রম।
নগরীর ১৬টি থানার মধ্যে ১১টি ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
সাতক্ষীরায়, সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সহায়তায় একই দিনে ৮টি থানার মধ্যে ৬টি থানা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে। সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আশরাফ কলারোয়া থানা মিলনায়তনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ছাত্র সমন্বয়কারীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন এবং স্টেশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।
লক্ষ্মীপুরে কমলনগর থানা-পুলিশ সদস্যরা শনিবার দুপুরে কর্মস্থলে ফিরেছেন। যোগদানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ওসিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময়, দলমতে সবার মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দীন আনোয়ার বলেন, "পুলিশ কারও শত্রু নয়, বন্ধু ও সেবক হয়ে কাজ করবে।"
সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে বরিশালে স্বল্প পরিসরে মহানগর চার থানা ও জেলা পুলিশের ১৪ থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির জানান, নগরীর চার থানার পুলিশ সদস্যরা কোথাও যায়নি। তারা থানাগুলোতে অবস্থান করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শুরু হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি'র নিরাপত্তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোলাহাট থানার কার্যক্রম চালু হয়েছে। ভোলাহাট থানা সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫০ গজ দূরে হওয়ায় বিজিবি তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হবে।
এদিকে, গেল কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। থানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাসদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি জানান, পুলিশের সকল থানার দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এখনও থানার বাইরে টহল শুরু করা হয়নি। এছাড়া ট্রাফিক এবং পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রমও শুরু হতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে এখনো কার্যক্রম শুরু করেনি এমন কয়েকটি থানাতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি পালন করছে রাজশাহীর বাঘা থানার পুলিশ। থানা এলাকায় নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছেন সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা।
এছাড়া, রাজবাড়ী থানায় গতকাল পর্যন্ত কোনো পুলিশ দেখা যায়নি। থানার মূল ফটকে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।