‘আমি ৮ দিন আয়নাঘরে ছিলাম, আয়নাঘর আমার সৃষ্টি না’: মেজর জেনারেল জিয়া
সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া আলোচিত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান দাবি করেছেন, তিনি নিজেও আট দিন আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন এবং এটি তার সৃষ্ট বন্দিশালা না।
তিনি বলেন, 'গত ৭ আগস্ট রাতে আমাকে বাসা থেকে ডিজিএফআই এর একটি দল আমাকে নিয়ে আসে। গতকাল রাত পর্যন্ত গত ৮ দিন আমি আয়নাঘরে ছিলাম। আমি কোনো গুম, খুনের সাথে জড়িত না।'
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম আরফাতুল রাকিবের আদালতে রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারককে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, 'যেসব ব্যক্তি আয়নাঘর থেকে বের হয়ে আসছে তাদের কেউ বলুক আমি তাদের সেখানে রেখেছি। যেভাবে আমাকে দোষারূপ করা হচ্ছে, সেটা সঠিক নয়। আমি অসুস্থ, হার্টের অসুখসহ অন্যান্য সমস্যা রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, র্যাবে থাকালে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জিডি হয়নি।
অন্যদিকে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নজরদারি প্রযুক্তি পেগাসস, হেফাজত ইসলামের আন্দোলনের ওপর দমনপীড়ন, জোরপূর্বক গুম এবং বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তবে আদালতে তিনি সবকিছু অস্বীকার করেন।
পেগাসাস সফটওয়ারের বিষয়ে আদালত জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পেগাসাস বলে কিছু নেই, কারো মোবাইল ট্র্যাকিং করিনি।'
শুনানি শেষে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আরফাতুল রাকিব। এর আগে শুনানির জন্য তাকে আদালতে হাজির করে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন। আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাকেও সেই একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপি জানায়, গোপন খবরের ভিত্তিতে গতকাল গভীর রাতে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে নিউমার্কেট থানায় রুজু করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন।
তিনি ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি ওই কোম্পানির পরিচালক ছিলেন।
এর আগে ২০০৯ সালে তিনি র্যাব-২ এর ভাইস-ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পান।
একই বছর তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক নিযুক্ত হন।