চট্টগ্রাম বন্দরে ১৫০ বছর আগে ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার
কর্ণফুলী নদীর চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া এক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। জাহাজটি প্রায় ১৫০ বছর আগে ডুবে গিয়েছিল বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। জাহাজটির ভেতরে পাওয়া জিনিসপত্র দেখেই এ ধারণা তাদের।
দীর্ঘ আট মাসের প্রচেষ্টায় বন্দরের ডাঙ্গারচর ঘাটের কাছাকাছি এলাকা থেকে হীরামন স্যালভেজ লিমিটেড নামের একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে।
এর আগে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল।
শিপিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হওয়ায় এখন বন্দর চ্যানেলে জাহাজের চলাচল আরও নিরাপদ হলো। জায়গাটিতে পলি জমা কিংবা ডুবো চর সৃষ্টির আর আশঙ্কা থাকবে না।
হীরামন স্যালভেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এটি ব্রিটিশ আমলে ডুবে যাওয়া জাহাজ হতে পারে। কারণ জাহাজটি থেকে সেই সময়ের লোগোযুক্ত কয়েনসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া জাহাজটির ইঞ্জিন কয়লাচালিত। প্রায় দেড়শ বছর আগের জাহাজগুলো কয়লাচালিত ইঞ্জিন দিয়ে চলত। তাই আমরা ধারণা করছি জাহাজটি প্রায় দেড়শ বছর আগে ড়ুবে গিয়েছিল।'
তিনি আরো বলেন, 'জাহাজটিতে ১৫০ বছরের পুরনো মুদ্রা পাওয়া গেছে। এছাড়া তামা-পিতল ও রূপার আসবাবপত্র যেমন- প্লেট, পাতিল, গ্লাস, পানি রাখার পাত্র ও চামচ পাওয়া গেছে। মোমবাতির দানি, ফুলের টপ, আলমারির নকশা, হ্যারিকেন, কুপি, হাতির দাঁত, দূরবীনসহ নকশা করা বিভিন্ন শৌখিন জিনিসপত্রও পাওয়া গেছে জাহাজটি থেকে।
উপমহাদেশে বাণিজ্য করতে এসে জাহাজটি কর্ণফুলীর এ জায়গায় ডুবে গিয়েছিল বলে ধারণা তার।
জাহাজটি উদ্ধারে জড়িত মো. জহির নামে এক ডুবুরি বলেন, 'জাহাজটি নদীর ৬০ ফুট গভীরে ছিল এবং বালি ও মাটি পড়ে চর হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে আমরা ড্রেজিং করে জাহাজটি উন্মুক্ত করি এবং দক্ষ ডুবুরিদের মাধ্যমে জাহাজের মাঝখানে ওয়্যার সলিং করে কেটে দুই ভাগে বিভক্ত করি।'
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, 'বন্দর চ্যানেল থেকে জাহাজ উদ্ধারের ফলে এখন জাহাজ চলাচল নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি ড্রেজিং খরচ কমবে। জাহাজটি কত বছর আগে ডুবেছে, সেটি নিশ্চিত করে না বলা গেলেও এটি যে অনেক বছর আগের, তা নিশ্চিত করে বলা যায়।'