‘বাণিজ্য অগ্রাধিকার ধরে রাখতে বাংলাদেশকে শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’
কানাডার কাছ থেকে পাওয়া বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে তার কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক আলোচনায় হাইকমিশনার এ কথা বলেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এবং বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয়কারী বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে আশ্বস্ত করে বলেন, তার সরকার আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) মান অনুযায়ী শ্রম অধিকার বজায় রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, 'আমাদের বড় বিনিয়োগ দরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে এমন একটি অর্থনীতি পেয়েছে, যা বিপুল পরিমাণ ঋণগ্রস্ত এবং সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল ছিল।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে অর্থনীতি সংস্কার করা।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার আগের সরকারের আমলে ভেঙে পড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করছে এবং 'প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে'।
জবাবে হাইকমিশনার নিকোলস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা দিতে, বিশেষ করে সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে কানাডার প্রস্তুতির কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সমর্থন করার জন্য কানাডার আগ্রহের কথাও উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন বিপ্লব দেশে আশার নতুন যুগের সূচনা করেছে।
তিনি বলেন, 'এগুলো ঐতিহাসিক সুযোগ। এই পরিবর্তনগুলো হয়তো আর কখনোই ফিরে আসবে না।'
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে নির্বাচন আয়োজনের আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার করা হবে।
তিনি বলেন, আগের সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন কারচুপি কমিশনে পরিণত করা হয়েছিল।
কানাডার হাইকমিশনার বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, কানাডা রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা জনগণের জীবিকার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করে রোহিঙ্গা শিবিরে উপচে পড়া ভিড় কমানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশার আলো দেখাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।