আরও ৩৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ
দেশের ৩৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ এর উপসচিব মুহাম্মদ ইব্রাহীম এই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন।
এর আগে গতকাল (৯ সেপ্টেম্বর) ২৫ জেলায় নতুন ডিসি দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন জেলায় নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসির সংখ্যা দাঁড়াল ৫৯-এ।
নতুন নিয়োগ পাওয়া ৩৪ ডিসির মধ্যে ১৬ জন ২৪তম প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এছাড়া, বাকি চার জেলায়ও শিগগিরই নতুন ডিসি নিয়োগ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট এসব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে বদলি করা হয়েছিল। ওইসব জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিয়োগ পাওয়া সব ডিসি ও ইউএনওকে পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে।
ডিসি ও ইউএনও পদে কারা নিয়োগ পাবেন সেই নিয়ম থাকলেও তাদের মেয়াদ কত দিন হবে, তা বেঁধে দেওয়া নেই। ফলে সরকার চাইলেই যেকোনো সময় ডিসি ও ইউএনওদের প্রত্যাহার করতে পারে।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ডিসি পদে পরিবর্তন আনে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার যেসব কর্মকর্তাকে মাঠ প্রশাসনে নির্ভরযোগ্য মনে করেছিল, তাদেরকে তুলে নিয়ে আসা হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ডিসি পরিবর্তন এরই অংশ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তবে আরেকটি সূত্র জানিয়েছিল, ডিসিসহ মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেসব কর্মকর্তা বর্তমানে রয়েছেন, তারাই আর মাঠে থাকতে চাচ্ছেন না। কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এসব কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই একতরফা নির্বাচন করা, বিরোধী পক্ষকে দমন-পীড়নসহ বিভিন্ন অনিয়ম করা হয়েছে।
সরকারের সমর্থনে কোনো কোনো কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবেও অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ফলে এসব কর্মকর্তারা এখন মাঠ প্রশাসনে দায়িত্বপালনে যেমন অস্বস্তিতে রয়েছেন, তেমনি জনসাধারণের ক্ষোভের কারণ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাষ্ট্র সংস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকেই পদত্যাগ করেন। চুক্তিভিত্তিক কয়েকজন সচিবের চুক্তি বাতিল করা হয়।
এছাড়া জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়েও বদলি করা হয়েছে।
সরকারের এসব কার্যক্রমকে দেশের প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগের সাজানো প্রশাসন বের করে নিয়ে আসার উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বিএনপি সরকারের সময় ২৪তম বিসিএস ব্যাচের নিয়োগ হওয়ায় গত সরকারের সময় এই ব্যাচের অনেকেরই ভালো পদায়ন হয়নি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই ব্যাচের দুই ডজন কর্মকর্তাকে ডিসির পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।