ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন সংলগ্ন সড়ককে ‘শহীদ ফেলানি সড়ক’ নামকরণ
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনসংলগ্ন সড়কটিকে 'শহীদ ফেলানি সড়ক' নামকরণ করা হয়েছে।
পিপলস অ্যাক্টিভিস্ট কোয়ালিশন (পিএসি) নামে একটি সংগঠন শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পুলিশের বাধা উপেক্ষা ওই সড়কে নেমপ্লেট স্থাপন করে।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের সড়কে কিছু লোক জড়ো হতে থাকে। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ওই সড়কে অবস্থান নিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পিএসির নেতাকর্মীরা নেমপ্লেট লাগাতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় তাদের 'দিল্লি না ঢাকা/ ঢাকা ঢাকা' বলে স্লোগান দিতে শোনা যায়।
একপর্যায়ে সড়কে 'শহীদ ফেলানি সড়ক' লেখা একটি নেমপ্লেট বসানো হয়।
বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী দিল্লিতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। একদিন পর তার লাশ বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।
ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে কয়েক ঘণ্টা ঝুলে ছিল। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর লাশ আলোড়ন তুলেছিল দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমে।
সম্প্রতি বিএসএফের আট দিনের ব্যবধানে সীমান্তে দুটি হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার স্বর্ণ দাস (১৩) নামে এক কিশোরী বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ এ ধরনের নির্মম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সরকার স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সীমান্ত হত্যার এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য যৌথ ভারত-বাংলাদেশ নির্দেশিকা, ১৯৭৫ এর বিধানের লঙ্ঘন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
এ ধরনের জঘন্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করে সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা, দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।