চট্টগ্রাম ও ফেনীতে ছাত্র হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত জুলাইয়ে সংঘটিত সহিংসতার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গতকাল রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার কথা আজ সোমবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন – ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক রিফাত, এবং চান্দগাঁও থানা শাখার কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সন্ত্রাসী মো. ইসতিয়াক আলী ওয়াছিফ।
র্যাব জানায়, এরা দুজনই হত্যামামলা এবং হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি। চট্টগ্রাম ও ফেনীতে পৃথক এ দুই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, রিফাত গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। নিহত আন্দোলনকারীদের একজন ছিলেন শিক্ষার্থী ছাইদুল ইসলাম (২০)। ঘটনার দিন তিনি একটি মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। ওই মিছিলে অভিযুক্ত রিফাত তার কাছে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন শিক্ষার্থী ছাইদুল ইসলাম (২০)। এ সময় আসামিরা ছাত্র জনতার ওপর গুলি ছুঁড়ে। শিক্ষার্থী ছাইদুল গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণভয়ে ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে শুয়ে পড়ে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা সেখানে উঠে ছাইদুলের শরীরের ১৪ থেকে ১৬টি গুলি করে। একই সঙ্গে লাঠি-সোঠা, লোহার রড, রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফেনী মডেল থানায় ৯৪ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকেই রিফাত আত্মগোপনে চলে যান।
এই মামলার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে র্যাব জানতে পারে, মামলার এজাহারনামীয় আসামি রিফাত চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার সিডিএ এভিনিউ এলাকায় অবস্থান করছে। এই খবরের ভিত্তিতে গতকাল রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অপরদিকে, ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। এতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অংশ নেয় কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আলী ওয়াছিফ। নগরের বিভিন্ন থানায় মারামারি, অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টা সংক্রান্ত ৮টি মামলা রয়েছে ওয়াছিফের বিরুদ্ধে।
এর আগে গত ২৪ মে ষোলশহর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. মনছুর আলমকে মারধরে নেতৃত্ব দেয় এই ইসতিয়াক। ওই ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানায় দায়ের মামলা করেন ভিকটিম মনছুর আলম।
তদন্তে নেমে র্যাব জানতে পারে, সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আলী ওয়াছিফ নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় অবস্থান করছে। সে অনুযায়ী, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।