গণপিটুনিতে মৃত্যু, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। এসব ঘটনায় 'অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে' বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা বলেছেন উপদেষ্টা।
ঢাবি ও জাবিতে গণপিটুনির পৃথক দুটি ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে এই পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢালাওভাবে 'বহিরাগত' নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, উচিতও নয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার প্রয়োজন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাডেমিক পরিবেশের বিঘ্ন না ঘটে। একইসাথে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিসর যাতে উন্মুক্ত থাকে, এবং জনগণের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিথস্ক্রিয়ারও সুযোগ থাকে। 'বহিরাগত' জনগণের চেয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ অতি-জরুরি।
'দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ এই অভ্যুত্থান ও বিগত বছরগুলোতে যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিপীড়ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত মামলা করতে হবে।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিশন করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্যোগে নির্যাতনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরো বলেন, নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজিত 'মবকে' নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মবজাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয়, এবং কোনো সমাধানও আনবে না।
গতকাল বুধবার রাতে চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে কয়েক দফায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সেদিন রাতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে মারধর করে কিছু শিক্ষার্থী। পরে প্রক্টর অফিসের মাধ্যমে ককে পুলিশে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান পুলিশের গাড়িতে নেওয়ার সময়– শামীম স্বাভাবিকভাবে হেঁটে গাড়িতে ওঠেন। সেই সময় তাকে দেখে গুরুতর আহত মনে হয়নি।
তবে এরপর সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। টিবিএসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: কামাল হোসেন।
গণপিটুনিতে মৃত্যুর বিষয়টিকে 'অস্বাভাবিক' উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, "১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষার্থীরা আটকের পর মারধর করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয়। আমরা আশুলিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম আসে। এসময় তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এরপর পুলিশে সোপর্দ করলে তিনি নিজে হেঁটে পুলিশের গাড়িতে ওঠেন। তখন তাকে দেখে আশঙ্কাজনক মনে হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের গাড়িতে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। বিষয়টি ভালোভাবে না জেনে মন্তব্য করতে পারছি না।"