প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হেয়ার রোডে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণার কার্যক্রম গ্রহণের অংশ হিসেবে গত বুধবার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালককে প্রধান বিচারপতির বাসভবন সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
এতে আরও বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনা স্থায়ীরূপে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে এই ঐতিহাসিক স্থাপনার সুরক্ষা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে প্রধান বিচারপতি গুরুত্বারোপ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৬৮ সালের প্রত্নতত্ত্ব আইনের বিধান অনুযায়ী বাসভবনটির মালিকানা সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে অক্ষুণ্ন রেখে এটি সংরক্ষণ করা হলে তা জনমানসে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। এর মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই স্থাপনার সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হবে। এ লক্ষ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে বিশেষ সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির বাসভবনকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণার কার্যক্রম গ্রহণের অংশ হিসেবে গতকাল (বুধবার) প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালকের কাছে চিঠি পাঠান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রত্নতত্ত্ব) মো. আমিরুজ্জামান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার পর নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত হলে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য যেসব আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়, তার মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবন অন্যতম। ১৯০৮ সালে নির্মিত অনন্য এ স্থাপনার নির্মাণশৈলীতে মোগল ও ইউরোপীয় ধ্রুপদী স্থাপত্যরীতির মিশ্রণ রয়েছে। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে যাওয়ার পর এই ভবন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলেও ১৯৫০-এর দশকের শুরু থেকে ভবনটি প্রধান বিচারপতির বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।