চট্টগ্রামের লালখান বাজারের নাম হবে শহীদনগর
১৯৭১-এর শহীদদের স্মরণে চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারের নাম পরিবর্তন করে শহীদনগর রাখা হবে বলে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ১১তম সাধারণ সভায় নাম পরিবর্তনের এ প্রস্তাব করেন ১৪ নং লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের এ প্রস্তাব পেয়েই প্রয়োজণে আইনগত সমস্যা মোকাবেলা করে লালখান বাজারের নাম পরিবর্তন করে শহীদনগর করার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা।
আবুল হাসনাত বলেন, "যদি আইনগত কোনো বাধা বিপত্তি না থাকে তাহলে প্রস্তাবনাটা স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে লিখিতভাবে পেশ করা উচিত।"
তিনি আরও বলেন, ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে হামলা শুরুর পর এই লালখান বাজার পাহাড় থেকে মুক্তিকামী সৈনিকরা প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই যুদ্ধে ও পরবর্তীতে এই লালখান বাজারে ২ হাজারেরও বেশি বীর বাঙ্গালি শহীদ হয়েছেন।
"তাই শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এলাকার নাম শহীদনগর রাখার প্রস্তাব করেছি," বলেন তিনি।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে লালখান বাজারের পরিবর্তে শহীদনগর নামকরণের জন্য কাউন্সিলরদের সর্বসম্মত প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল চসিক। ওই সময় মেয়র ছিলেন প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এর আগে ১৯৭৩ সালে লালখান বাজারের নাম পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন মহিউদ্দীন চৌধুরী। ওই সময় বিভিন্ন দোকানপাটের সাইনবোর্ডে লালখান বাজার মুছে দিয়ে শহীদনগর লেখা হয়েছিল।
মুক্তিযোদ্ধা গবেষক ডা. মাহফুজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় লালখান বাজার এলাকায় দুই হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে হানাদার বাহিনী। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ লালখান বাজার সংলগ্ন চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে আক্রমণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। তখন প্রতিরোধ করে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা। দুই পক্ষে তীব্র যুদ্ধ হয়। এতে ৫১ জন পুলিশ সদস্য শহীদ হন। তবে পাকিস্তানি বাহিনীর একজন মেজরসহ সাতজন মারা যায়।
পুলিশ লাইন দখলে নেয়ার পর হানাদার বাহিনী ধারণা করে, লালখান বাজারের স্থানীয় লোকজন বাঙালি পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতা করেছে। এর রেশ ধরে পরবর্তীতে লালখান বাজারে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় হানাদাররা।