স্কুল বন্ধ নাকি খোলা, সিদ্ধান্ত আজ
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা হবে কিনা তা নিয়ে আজ সিদ্ধান্ত হবে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
দেশের খ্যাতনামা ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য আমরা আজ (মঙ্গলবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসব। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য অংশীদারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের হার বেশি, তবে সাম্প্রতিক সংক্রমণ আগের ওয়েভগুলোর তুলনায় কিছুটা মৃদু। এভাবে মৃদু সংক্রমণ থাকলে এবং মৃত্যুর হার কম থাকলে মন্ত্রণালয় একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারে।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, "মৃদু সংক্রমণ শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। শিক্ষার্থীরা যদি ভ্যাকসিন গ্রহণ করে এবং সব সময় মাস্ক পরে থাকে, তাহলে ঠিকই ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে।"
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মত হলো, যেহেতু ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ভ্যাকসিন পেয়েছে, ফলে একেবারেই অনন্যোপায় হলে তবেই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, করোনায় দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য মন্ত্রণালয় কোন উদ্যোগ নেয় নি। এখন আবার স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিলে পুরো শিক্ষা খাত চরম লোকসানের সম্মুখীন হবে।
"সেজন্য মন্ত্রণালয় যথাসাধ্য চেষ্টা করবে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখতে এবং যথাযথ সময়সূচি অনুযায়ী ক্লাস চালু রাখতে", যোগ করেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ১.১৬ কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে এক কোটি শিক্ষার্থী ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছে; দুইটি ডোজই পেয়েছে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী।
উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে বর্তমানে ৪৪ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে, ২৩ লাখ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছে এবং ১৭ লাখ শিক্ষার্থী দুটি ডোজই গ্রহণ করেছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকে সারা দেশে তাদের কলেজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভ্যাকসিন নিতে পারবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কর্তৃক জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২২ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয় দিন চারটি বিষয়ে ক্লাস করবেন।
অন্যদিকে, এখন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয় দিন তিনটি বিষয়ের ক্লাস করছে। অষ্টম এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুইবার তিনটি বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একবার তিনটি বিষয়ে ক্লাস করছে।
১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র শিশুদেরকে কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, "আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলি। এ বিষয়ে এখনো আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি।"
এ বিষয়ে গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, "১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তাই তারা টিকা ছাড়াই ক্লাস করতে পারবে।"