সুরমার পানি কমছে, বাড়ছে কুশিয়ারার
সিলেটে সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। নদীর পানি কমলেও এখন প্লাবিত আছে জেলার বেশিরভাগ এলাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমেছে।
এ সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে কমলেও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বেড়েছে ৫ সেন্টিমটার। তবে কমেছে সারি ও লোভা নদীর পানি।
পাউবোর সিলেট কার্যালয়ের উপ-সহকাপহ প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, আজ সুরমা নদীর পানি আরও কমবে। কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জে বাড়ার কারণে ওই উপজেলার কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হতে পারে। তবে তা মারাত্মক কিছু হবে না।
নদীর পানি কমতে থাকায় কমতে শুরু করেছে প্লাবিত এলাকাগুলোর পানিও। নগরের নিচু এলাকাগুলো ছাড়া অন্যান্য এলাকা থেকে পানি প্রায় নেমেই গেছে। তবে উপশহর, তালতলা, তেররতন, ঘাসিটুলাসহ বিভিন্ন এলাকা এখনো জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে।
নগরের বাইরের বেশিরভাগ এলাকায়ই এখনও প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে এসব এলাকার মানুষের। নগরের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরে এলোও নগরের বাইরের প্লাবিত এলাকাগুলো এখনো অন্ধকারে রয়েছে। স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগও।
দক্ষিণ সুরমার হবিনন্দি এলাকার বাসিন্দা সুজন আহমদ বলেন, "চারদিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। ঘরেও এখনো পানি। নারী ও শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। কিন্তু ঘরের জিনিসপত্রের নিরাপত্তার আমাদেরকে এই ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যেই থাকতে হচ্ছে।"
বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলার প্রায় পুরোটাই তলিয়ে যায় পানিতে। তলিয়ে যায় সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কও। তবে এখন পানি অনেকটাই কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং।
তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ধীর গতিতে পানি নামতে শুরু করেছে। বর্ণি এলাকা ছাড়া সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের বাকি এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে গেছে।
পানি কমলেই ক্ষয়ক্ষতির আসল চিত্র জানা যাবে বলে জানান এই ইউএনও।
কোম্পানীগঞ্জ ছাড়াও গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ ও সিলেট সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ফেঞ্চুগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের দোকানপাটে ঢুকেছে পানি।
সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, পানি দ্রুতই কমছে। আজকে বৃস্টিও হয়নি। তবে পানি কমলেও এই বন্যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি রেখে যাবে। এই ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।