লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ছাড়া জিডি করা যাবে না অনলাইনে
সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়া অ্যাপ-ভিত্তিক অনলাইন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) সুবিধার অধীনে তৈরি অ্যাপ দিয়ে ঘরে বসেই মানুষ 'লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড' এর জিডি করতে পারবে।
তবে, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ছাড়া ধর্তব্য অপরাধের ক্ষেত্রে এই উপায়ে জিডি করা যাবে না। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীকে আগের মতোই থানায় হাজির হতে হবে।
এ বিষয়ে অনলাইন জিডির তদারক কর্মকর্তা রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. শাহ আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা জিডি আধুনিকায়ন করেছি। সামনে এর শতভাগ কার্যক্রম অনলাইনে হবে তবে এখন শুধু লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড এর জিডি করা যাবে।"
"হুমকি বা এ ধরনের বিষয়ে সাধারণত মামলা হয়। কেউ চাইলে জিডি করতে পারে আমরা সেটিও অনলাইনে করার সুবিধা রেখেছি। কিন্ত এই সুবিধা কিছুদিন পর উন্মুক্ত করা হবে।"
এছাড়া চলতি বছরে পুলিশের আরো ১২টি সেবা অনলাইনে মাধ্যমে পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
গত বছর পাইলট প্রকল্প হিসেবে দেশের বিভিন্ন থানায় এই সেবা চালু ছিলো। তখন এই সেবা অনেকটা সীমিত আকারে ছিলো। গত মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের দুই নতুন থানাসহ পুলিশ হাসপাতাল উদ্বোধনের সঙ্গে অনলাইন জিডির কার্যক্রমও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কুতুবদিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. জিয়াউদ্দিন টিবিএসকে জানান, অনলাইন জিডি উদ্বোধনের দিন এক ব্যক্তি থানায় জিডি করতে আসেন। সেদিন প্রচলিত পদ্ধতিতে জিডি করতে আসা ওই ব্যাক্তির তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করা হয়।
"যেকোন জিডিতে ওসি তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। তবে যেসব জিডি তদন্তের প্রয়োজন আছে সেগুলোতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার জন্য অফিসার ইনচার্জ তদন্তকারী নিয়োগ করে নির্দেশনা দেন," বলেন তিনি।
অনলাইন জিডির এই সুবিধা ২০১০ সালের শুরুর দিকে চালু হয়েছিল। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই সেই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এবার অনলাইন জিডির সুবিধা চালু করার পাশাপাশি আরো কিছু সেবা অনলাইনে যুক্ত করতে যাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে অনলাইন জিডির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ৫৬ হাজার ৪৩৭টি জিডি রেকর্ড করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি রেকর্ড হওয়া থানাগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর (১২ হাজার ৩৭০), মাদারীপুর সদর (৬ হাজার ৮৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া (২ হাজার ২৪), মাদারীপুরের শিবচর (২ হাজার ১৭), খুলনার সোনাডাঙ্গা (১ হাজার ৬১৯), ডুমুরিয়া (১ হাজার ৪৮৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা (১ হাজার ৩৬৩), খুলনার পাইকগাছা (১ হাজার ২৩৩), দাকোপ (৯৮৮), কিশোরগঞ্জের ভৈরব (৯২৭)।
এই তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি জিডি রেকর্ড করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায়।
জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমরানুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরসহ সারাদেশে মোট ৩২ থানায় অনলাইন জিডি করা যেতো। সম্প্রতি দেশের সব থানায় এই সুবিধা উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে গত বছর থেকেই সদর থানায় অনলাইন জিডির সুবিধা থাকায় অন্য এলাকাতে কিছু হারালেও এই থানা এলাকার ঠিকানায় জিডি বেশি করা হয়েছে।"
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন টিবিএসকে বলেন, "২০২১ সালে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানায় অনলাইন জিডি শুরু হয়। এজন্যই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় অনলাইন জিডির সংখ্যা বেশি। এসব জিডির অধিকাংশই কোনো অ্যাকশন নিতে হয় না। কারো কিছু হারালে ডকুমেন্টেশনের জন্যই জিডি করে। হুমকি অথবা ধর্তব্য অপরাধের ক্ষেত্রে থানা পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়।"