প্রথম বধির নারী হিসেবে মিস দক্ষিণ আফ্রিকা শিরোপা জিতলেন মিয়া লে রুক্স
প্রথম বধির নারী হিসেবে মিস দক্ষিণ আফ্রিকা শিরোপা জিতেছেন ২৮ বছর বয়সী মিয়া লে রুক্স। সুন্দরী প্রতিযোগিতা ঘিরে নানা বিতর্ক শেষে তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় নিজের নাইজেরিয়ান ঐতিহ্য নিয়ে ঠাট্টার শিকার হওয়ায় নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নাইজেরিয়ার একজন প্রতিযোগী।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা সুন্দরীর মুকুট জয়ের পর মিয়া বলেন, তার এই জয় তাদেরকে অনুপ্রেরণা দেবে যারা নিজেদের "তার (মিয়া) মতো স্বপ্ন পুরন করতে গিয়ে নিজেকে" সমাজ থেকে আলাদা মনে করেছেন। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অথম ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদেরও সাহায্য করতে চান বলে জানিয়েছেন মিয়া।
এর আগে গত সপ্তাহে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী আইনের ছাত্রী চিদিম্মা আদেতশিনা; যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তার মা দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে নিজের মিথ্যে পরিচয় দিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া আদেতশিনার বাবা একজন নাইজেরীয় এবং মা মোজাম্বিক বংশোদ্ভূত।
তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এক ক্যাবিনেট মন্ত্রীও আদেতশিনার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার আছে কিনা— সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
তিনি বলেন, 'আফ্রোফোবিয়া' নামে একপ্রকার জাতিগত ঘৃণার শিকার হয়েছেন তিনি যেখানে অন্যান্য আফ্রিকান দেশ থেকে আসা মানুষ এ ধরনের জাতিগত ঘৃণার শিকার হয়।
মাত্র এক বছর বয়সেই শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলা মিয়াকে শব্দ উপলব্ধি করতে পারার জন্য কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট [বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা মানুষের কানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ঢোকানো হয়; ফলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শব্দ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়] করাতে হয়েছিল।
প্রথম শব্দটি উচ্চারণ করতে পারার আগে তাকে অন্তত দুই বছর স্পিচ থেরাপি নিতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিযোগিতায় জয়ের পর মডেল এবং মার্কেটিং ম্যানেজার মিয়া বলেন, "আমি একজন গর্বিত দক্ষিণ আফ্রিকান বধির নারী এবং সমাজ থেকে নিজেকে আলাদা মনে করতে কেমন লাগে সেটি আমি জানি। আমি জানি, আমাকে বাধা জয় করার জন্যই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে এবং আজ রাতে আমি সেটাই করেছি।"